ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে জীবন নামের এক সেনেটারি মিস্ত্রিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের ব্যাপারীপাড়া বিল্লাল স্টোরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জীবন (২৩) ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কালিকাপুর পশ্চিমপাড়ার রজব আলীর ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারা দুই বন্ধু কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে জীবনের বন্ধু শিমুল ও তার বন্ধুরা মিলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। জীবনের বন্ধু তাহিদ জানান, মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় জীবনকে আমার সামনে চাকু মেরেছে। ঘটনার সময় আমি একটু দুরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। জীবন শুধু আমাকে বললো বন্ধু আমাকে ধর। সেখান থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা জানায়, শহরের ব্যাপারী পাড়া এলাকায় একটি বাসার গলিতে বসে চার বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে একজন জীবন হোসেনকে ফোন করে ডেকে আনে। তখন তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে একটি দোকানের সামনে যায় তারা। সেখানে তিন বন্ধু জীবনকে পিছমোড়া করে ধরে আরেক বন্ধু ছুরিকাঘাত করে তাকে। স্থানীয়রা জীবনকে রক্ষা করতে গেলে তারা পালিয়ে যায়। পরে জীবনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ছোয়া ইসরাইল বলেন, হাসপাতালে আমরা জীবন নামের ছেলেটিকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার শরীরে একাধিক স্থানে ছুরির আঘাত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও অর্গান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। শিল্পি নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কয়েকজন ছেলে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি হয়। জীবন একজনকে ফোন দিয়ে তাকে বাঁচাতে অনুরোধ করেন। এসময় তিন-চারজন মিলে জীবনকে ছুরিকাঘাত করে। নিহত জীবনের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম মুক্ত বলেন, লোকমুখে জানতে পারি ব্যাপারীপাড়ার বাসিন্দা জিয়ার ছেলে শিমুল ও একই পাড়ার বাদলের ছেলে পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন মিলে আমার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। তাদের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। শুক্রবার বিকেলে মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্ধুদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এর বেশি বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা যায়নি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.