দেশজুড়ে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ : বৃষ্টি কবে জানালো আবহাওয়া অফিস গরমের তীব্রতায় চুয়াডাঙ্গার জনজীবনে অস্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে শুক্রবারও বয়ে গেছে মৃদু তাপপ্রবাহ। দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি না হওয়া, মাটি উত্তপ্ত হওয়া ও বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এদিনও জনজীবনে অস্বস্তি দেখা দেয়। তবে আজ শনিবার বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও দেশজুড়ে বজায় ছিল মৃদু তাপপ্রবাহ। চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, যশোর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রাবহ বয়ে গেছে। এ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর ডিমলায়। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা যেন অনুভব হচ্ছে ৪০ ডিগ্রি। এর কারণ হিসেবে বাতাসের আদ্রতা বেড়ে যাওয়া আর দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি না হওয়ায় মাটি উত্তপ্ত হওয়াকে দায়ী করছেন আবহাওয়াবিদরা। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আজ শনিবার থেকে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা কম হলেও একটু বেশিই গরম অনুভূত হচ্ছে। আগামীকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি বাড়তে পারে। এতে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে।
এদিকে, সূর্যের প্রখরতা আর ভ্যাপসা গরমে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমের কারণে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমও অনুভূত হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, কয়েক দিন ধরে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অস্থির হয়ে পড়ছে। তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি মধ্যে ওঠানামা করছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে ভ্যাপসা গরমে শরীর জলে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরম কমার সম্ভাবনা নেই। এর আগে, বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অতিরিক্ত গরমের কারণে সড়কে মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক কম। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষগুলো। গরমের কারণে ঘরে-বাইরে কোথাও মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে না। সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মরসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আগামী সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন বর্ষাকাল। প্রতিদিন প্রতিটি বিভাগেই বৃষ্টির আভাস থাকে। বিভাগগুলোর সব জেলায় বৃষ্টি হয় না বা হলেও বেশিক্ষণ বৃষ্টি হয় না। তাই তাপপ্রবাহ বা গরম কমছে না। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আগামী রবি ও সোমবার দিনের বেশিরভাগ সময়ই বৃষ্টি থাকবে, সপ্তাহখানেকের আগে থামার সম্ভাবনা কম। তখন তাপমাত্রা কমে আসবে, গরম কম অনুভূত হবে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More