‘সাধারণত বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে তা পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়, কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বেশিরভাগ রোগীদের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। এসব রোগীদের মাথা দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তা পেট দিয়ে বেরিয়ে যায়। আবার বুক দিয়ে গুলি ঢুকে তা সমান্তরালভাবে না বেরিয়ে পেট দিয়ে বেরিয়ে যায়। এতে বুঝতে পারি যে আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার কিংবা উঁচু দালান থেকে গুলি করা হয়েছে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ এ সাক্ষ্য দিয়েছেন।
জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নবম দিনের মতো আজ সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
এদিন সকালে এ মামলায় গ্রেফতার একমাত্র আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
মামলার ২৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে মোস্তাক আহমেদ বলেন, গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা না দিতে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর ডাক্তাররা চাপ দিতো। তারা বলত, এরা সন্ত্রাসী, অতি উৎসাহী হয়ে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে না।
জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের চিকিৎসায় বাধা দিতে স্বাচিপের নেতৃবৃন্দ গত বছরের ২৫ জুলাই ঢামেক হাসপাতাল থেকে ৫ জন ডাক্তারকে বদলি করেছিল।
তিনি আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে যখন আন্দোলনকারীরা ঢামেক হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স যোগে আসছিল, তখন শহীদুল্লাহ্ হলের সামনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রোগীদের পরিচয় যাচাই করতো।
তারা আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ রোগীদের ঢামেকে চিকিৎসা নিতে বাধা দিতো বলে জানান এই ডাক্তার।
এর আগে এ মামলায় ২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর আগে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজ সাক্ষী হয়েছেন সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.