শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততা বেড়েছে খামারিদের : মানুষের চেয়েও উঁচু সাদা পাহাড় ও সুলতানের দাপট রাজধানীর হাটে গরু বিক্রি নিয়ে সংশয়ে চুয়াডাঙ্গার খামারিরা

জহির রায়হান সোহাগ: কোরবানি ঈদের আর কয়েকদিন বাকী। তাই শেষ মুহূর্তে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ততা বেড়েছে চুয়াডাঙ্গার নিয়মিত ও মরসুমি খামারিদের। এ বছর জেলার সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় গরু আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি গ্রামের স্বপ্ন সাজ এগ্রো ফার্মের গরু ‘সাদা পাহাড় ও সুলতান’। মানুষের চেয়েও উঁচু গরু দুটি দেখতে ভিড় করছেন সবাই। প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা আসছেন গরু দুটি দেখতে। অতি যতেœ গরু দুটি লালন পালন করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি গ্রামের খামারি হাফিজুর রহমান। শখের বসেই গরু দুটির নাম রেখেছেন সাদা পাহাড় ও সুলতান। মানুষের চেয়েও উঁচু গরু দুটি দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন অনেকেই। ক্রস ব্রাহমা জাতের গরু সাদা পাহাড় ও ক্রস শাহিয়াল জাতের গরু সুলতান। গরু দুটির এক একটির ওজন প্রায় ৩০ মণ। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা হচ্ছে গরু দুটিকে। প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা আসছেন গরু দুটি দেখতে। আশানুরূপ দামেই গরু দুটি বিক্রি করবেন বলে জানান খামারি হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, মূলত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তার খামারে গরু কিনতে আসেন ক্রেতারা। হাফিজুর রহমানের খামার ঘুরে দেখা যায়, সাদা পাহাড় ও সুলতান ছাড়াও তার খামারে রয়েছে কালা পাহাড়সহ নানা বাহারি নামের বড় বড় প্রায় ৩০০ গরু। বড় খামারটিতে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। গরুগুলো মোটাতাজাকরণ নিয়েই তাদের ব্যস্ততা। এদিকে, হাফিজুর রহমানে মতো শেষ সময়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত জেলার অন্য খামারিরা। তবে, রাজধানী ঢাকার হাটে গরু বিক্রি নিয়ে সংশয়ে দিন কাটছে তাদের। খামারিরা বলেন, সম্প্রতি মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চুরি ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত তারা। এবছর ঢাকার হাটগুলোতে বেচাবিক্রি কেমন হবে সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তবে, সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকায় অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। তাই সবকিছু ঠিক থাকলে এবছর গরু বিক্রি করে ভালো লাভের আশা খামারিদের। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য মতে, এবার কোরবানি ঈদ উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রায় দুই লাখ পশু প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে ষাঁড় রয়েছে ৪৮ হাজার ৯০৭টি, বলদ এক হাজার ৪৭৮টি, গাভী ৬৯৪টি, মহিষ ১৪৫টি, ছাগল এক লাখ ৪৪ হাজার ২২০টি, ভেড়া ৩ হাজার ৯৮৫টি এবং অন্যান্য পশু রয়েছে ৭টি। চুয়াডাঙ্গা জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ ২৪ হাজার ৮৫৫ টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৭৪ হাজার ৫৮১টি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পশু পাঠানো হবে বাইরের জেলায়। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণে খামারিদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডা. এএইচএম শামিমুজ্জামান। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণে খামারিদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পক্ষ থেকে জেলার পশুহাটগুলো নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More