মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে মেগা-সুনামি আঘাত হানতে পারে। ক্যাসকেডিয়া সাবডাকশন জোনে (সিএসজেট) বড় ধরনের ভূমিকম্পের কারণে এই মেগা-সুনামি সৃষ্টি হতে পারে।
নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, এই সুনামির কারণে উপকূলীয় এলাকায় হঠাৎ ভূমি ধস এবং শত শত ফুট উচ্চতার ঢেউ তৈরি হতে পারে। এতে লাখ লাখ মানুষ, অবকাঠামো এবং ভয়াবহ পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, এখনই উন্নত প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা এবং দৃঢ় অবকাঠামো গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
দ্য ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে এটি একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হবে, যেটি একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে আঘাত হানবে। ১,০০০ ফুট উঁচু ‘মেগা সুনামি’ যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশাল অংশকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে পারে।
ভার্জিনিয়া টেকের গবেষক টিনা দুরা, ভার্জিনিয়া টেক গবেষক দলের নেতৃত্বে সতর্ক করেছেন যে, সিএসজেট প্রায় ৬০০ মাইল বিস্তৃত, উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ড পর্যন্ত। এখানে জুয়ান ডি ফুকা প্লেটের নিচে নর্থ আমেরিকান প্লেটের স্লাইড চলায় বিশাল টেকটোনিক চাপ সঞ্চিত হচ্ছে। তারা ধারণা করেছেন, আগামী ৫০ বছরে এখানে ৮ দশমিক শুন্য বা ততোধিক মাত্রার ভূমিকম্পের ১৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ভূমিকম্প ঘটলে উপকূলীয় এলাকা হঠাৎ ৬ দশমিক ৫ ফুট পর্যন্ত নিম্নমুখী হতে পারে, যা বন্যাপ্রবাহকে বৃদ্ধি করবে এবং শতাধিক ফুট উচ্চতার সুনামি ঢেউ তৈরি করবে। ফলে পশ্চিম উপকূলে মিলিয়ন মানুষ, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে।
সিএসজেট ভূমিকম্পের সর্বশেষ বড় ধাক্কা ১৭০০ সালে এসেছিল, যা জাপান পর্যন্ত বিস্তৃতির রেকর্ড করা হয়েছিল। বর্তমানে, ঘনবসতি, উন্নত শহরাঞ্চল এবং গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ নেটওয়ার্কের কারণে প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মেগা-সুনামির সম্ভাব্যতা
দুরার দলের সিমুলেশন অনুযায়ী, সিএসজেটে বড় ভূমিকম্পের ফলে ১,০০০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা বিশিষ্ট সুনামি তৈরি হতে পারে। সিয়াটেল, পোর্টল্যান্ড এবং উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার শহরগুলো মিনিটের মধ্যে প্লাবিত হতে পারে। বিশাল সংখ্যক মডেল দেখিয়েছে যে, প্রচুর মানুষ, ভবন এবং সড়ক এই ঢেউয়ের তলায় পড়তে পারে।
গবেষকরা বলছেন, হঠাৎ ভূমি ধস এবং চরম ঢেউ একত্রিত হলে, এমন পরিস্থিতি হবে যা পূর্বে ইতিহাসে দেখা যায়নি। তারা সতর্কতা ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পরিকল্পনা এবং দৃঢ় অবকাঠামো তৈরি করার তাগিদ দিচ্ছেন।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
দূর্যোগ-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে দক্ষিণ ওয়াশিংটন, উত্তর ওরেগন এবং উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া। এলাকা নিম্নভূমি হওয়ায়, সমুদ্রস্তরের বৃদ্ধির কারণে ২১০০ সালের মধ্যে স্থায়ী প্লাবনের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা
টিনা দুরা বলেন, স্থানীয় সরকার, নীতিনির্ধারক এবং নাগরিকদের সহযোগিতায় সতর্কতা ব্যবস্থা ও কমিউনিটি প্রস্তুতি কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। আগামী মেগা-সুনামি ঝুঁকি কমাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.