গাজায় দীর্ঘযুদ্ধের শেকলে বেঁধে থাকা এক নারীর করুণ বর্ণনা: “আমরা চাই যুদ্ধ শেষ হোক”

স্টাফ রিপোর্টার:গাজার ৩৮ বছর বয়সী ইনাস আবু মামার জীবনের গল্প সংগ্রাম আর অসহায়তার এক দৃষ্টান্ত। দুই বছর ধরে চলা গাজা সংকটে তিনি হারিয়েছেন অনেক কিছু—নিজের বাড়ি, প্রিয়জন, নিরাপত্তা। বারবার বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে, চোখের সামনে বিলিয়ে গিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা। এই যন্ত্রণার মাঝে ইনাসের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা, “এই যুদ্ধ একবারের জন্য যেন শেষ হয়।”

মঙ্গলবার গাজার খান ইউনিসে ফিলিস্তিনি নারীর মুখে উঠে এ আকুতি, যা শুধু তার নয়, পুরো গাজার কোটি মানুষের হৃদয়ের ভাষা। “আমরা যা হারিয়েছি তা যথেষ্ট, আর আমরা চাই না এই ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত থাকুক,” ইনাসের এই কথা থেকে বোঝা যায় যুদ্ধের দীর্ঘতা কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষের জীবনে।

২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইনাসের পাঁচ বছরের ভাগনি স্যালি নিহত হলে তার বেদনা অমোচনীয়। ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ সালেম দেখেছেন, নাসের হাসপাতালে মর্গে মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইনাস। একই বিস্ফোরণে তার খালা-কাকা, ভগ্নিপতি ও চাচাতো ভাইসহ স্যালির ছোট বোন সেবা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও প্রাণ হারান। গাজার এই যুদ্ধ শুধুমাত্র মানুষকে নয়, পুরো পরিবারকে ভেঙে দিয়েছে।

ইনাস বলেন, “যুদ্ধ আমাদের জীবন ও পরিবার ধ্বংস করেছে, ঘরবাড়ি হারিয়েছি, হৃদয়ে গভীর ক্ষত রেখে গেছে।” বর্তমানে তিনি এবং তার বেঁচে থাকা আত্মীয়রা তাঁবু শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে খাবার, পানি ও চিকিৎসার তীব্র অভাব। যুদ্ধের ভয়াবহতা তাদের জীবনকে একেবারে পরিবর্তিত করে দিয়েছে।

সবচেয়ে বড় চিন্তা তার ভাগনেও, আহমেদ, যিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ইনাস আশায় বুক বেঁধেছেন যে আন্তর্জাতিক চাপ ইসরায়েলের ওপর বাড়বে এবং যুদ্ধ সমাপ্তির পথ খুলে দেবে। তবে তার আশঙ্কা, বিশ্ব নেতাদের অনীহা বা অবহেলা এই শেষ চেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে পারে।

এই মানবিক সংকটের পেছনে লুকিয়ে আছে গাজার জনগণের স্থিতিশীলতা ও শান্তির আকাঙ্ক্ষা। সাধারণ মানুষ যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় জীবনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More