যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে চীনের কোন অঞ্চলে?

স্টাফ রিপোর্টার:চীনের ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে চীনের যুক্তরাষ্ট্রমুখী রপ্তানি বছর বেসিসে-এ ১৫.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে এই শুল্ক সব চীনা অঞ্চলে সমানভাবে প্রভাব ফেলছে না। দেশটির ৩০টিরও বেশি প্রদেশ-স্তরের অঞ্চলগুলোর মধ্যে মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরতা ও রপ্তানির প্রভাব ভিন্ন ভিন্ন।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল অঞ্চলগুলো

পূর্ব উপকূলীয় চীনা প্রদেশগুলো মার্কিন বাজারে রপ্তানিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। গুয়াংডং, ঝেজিয়াং, জিয়াংসু, সাংহাই, শানডং ও ফুজিয়ান প্রদেশগুলো এক সঙ্গে ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে চীনের যুক্তরাষ্ট্রমুখী রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ অবদান রেখেছে।

মধ্য ও পশ্চিম চীনের কিছু স্থলভাগের প্রদেশ, যেমন- সিচুয়ান, আনহুই, হুবেই, হেনান ও চংকিং, মিলিতভাবে প্রায় ১০.৮ শতাংশ মার্কিন বাজারে রপ্তানি করেছে।

পরিমাণের দিক থেকে বড় হাব না হলেও, শানজি প্রদেশ মার্কিন বাজারের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। এখানকার ২২.৫ শতাংশ রপ্তানি মার্কিন বাজারের জন্য। এছাড়াও ফুজিয়ান ও সিচুয়ান প্রদেশের রপ্তানির যথাক্রমে ১৬.৪ এবং ১৪.৬ শতাংশ মার্কিন বাজারের জন্য। জাতীয় গড় নির্ভরতা ১১.৮ শতাংশ।

ট্রাম্পের পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর প্রদেশগুলোর রপ্তানিতে প্রভাব

কিছু প্রদেশের মার্কিন রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। উদাহরণস্বরূপ, ইউনান প্রদেশের রপ্তানি বছর বেসিস-এ ৭১ শতাংশ কমেছে, শানসি ও ছিংহাই প্রদেশে যথাক্রমে ৪৭.৯ ও ৩৯.৮ শতাংশ হ্রাস দেখা গেছে।

তবে কিছু প্রদেশের রপ্তানি বেড়েছে। হুবেই, গুয়াংসি, হেইলংজিয়াং, তিব্বত, ইনার মঙ্গোলিয়া ও গানসুতে মার্কিন রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিনজিয়াং অঞ্চলে রপ্তানি ২৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুল্কের বিভিন্ন খাতের ওপর প্রভাব

বিদ্যুৎ-যন্ত্রাংশ প্রায় সব প্রদেশের মার্কিন রপ্তানির মূল অংশ। যদিও এই খাতের রপ্তানি কমেছে, তবে অন্যান্য বাজারে বিক্রি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায়শই ক্ষতি আংশিকভাবে ক্ষতিপূরণ হয়েছে।

ফার্নিচার, খেলনা ও জুতা খাতের রপ্তানিতে মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরতা বেশি থাকায়, এই প্রদেশগুলোতে রপ্তানি হ্রাস দেখা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ফুজিয়ান প্রদেশের জুতার রপ্তানি ২৩.৮ শতাংশ কমেছে।

শুল্ক-ছাড় “ডি মিনিমিস” ব্যবস্থার বন্ধ হওয়ার প্রভাবও স্পষ্ট। এতে ফুজিয়ান, সিচুয়ান ও চংকিং প্রদেশের “বিশেষ ও অনির্ধারিত” পণ্যের রপ্তানি যথাক্রমে ৫৫.৩, ৭৪.১ ও ৮৭.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে হুবেই প্রদেশ এই ক্ষেত্রে ৩৫৪.৯ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে।

চীনের ইলেকট্রনিক্স খাতে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সরবরাহ চেইনের স্থানান্তরকে ত্বরান্বিত করছে। গুয়াংডং, জিয়াংসু, হেনান, সিচুয়ান ও চংকিং প্রদেশগুলো শুধুমাত্র ইউরোপ ও জাপানে রপ্তানি বাড়াচ্ছে না, বরং উদীয়মান বাজারে চিপ ও ইলেকট্রনিক উপাদানের রপ্তানিও বৃদ্ধি করছে। উদাহরণস্বরূপ, হেনান প্রদেশের মোবাইল ফোন উপাদানের রপ্তানি ভারতে ১০ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেকেন্ডারি ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে মনোযোগ দিয়ে চীনের প্রদেশগুলো বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More