অধিকার করলো কেরুজ চিনিকল : অ্যাওয়ার্ড পেলেন এমডি আবু সাঈদ

দর্শনা অফিস: সরকারের রূপকল্পগুলোকে সাফল্যের সাথে অর্জন করতে উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। রূপকল্প ২০৩১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের কৌশল হিসেবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শিল্পায়নকে মূলভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সরকার আধুনিক শিল্পায়নে বেসরকারি উদ্যোক্তা উন্নয়নের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) আয়োজিত “ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ এবং ইনস্টিটিউশনাল এপ্রিসিয়শেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ ট্রফি ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্পসচিব কেএম আলী আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি ও এফবিসিসিআই’র সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনপিও’র পরিচালক (যুগ্ম সচিব) নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক/প্রতিনিধিসহ সরকারি-বেসিরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, এনপিও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সবুজ উৎপাদনশীলতার উপর গুরুত্বারোপ করে তাদের কার্যক্রম চলমান রেখেছে। পরিবেশবান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, কল-কারখানায় সবুজ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি পুরস্কার প্রাপ্তদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নিজ নিজ শিল্প কল কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প কারখানার জন্যও মডেল হিসেবে পরিচিত হবেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর/সংস্থা উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও উন্নয়নে কাজ করছে। কল-কারখানায় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে মালিক, শ্রমিক, ভোক্তা এমনকি সরকারও তার সুফল পেয়ে থাকে। দক্ষতার সাথে এবং কম খরচে পণ্য উৎপাদন মালিক পক্ষের আকাক্সক্ষা থাকে সব সময়ই। প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের প্রতি আরও যতœশীল হয়ে তাদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গুণগতমানের পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ শিল্পখাত আবারও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা ও এফবিসিসিআই’র সকল সদস্য ও অ্যাসোসিয়টদের সফল চেষ্টায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি পূর্বে ন্যায় ঘুরে দাঁড়াবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সভাপতির বক্তব্যে শিল্পসচিব বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দফতর সংস্থা এবং শিল্প উদ্যোক্তাসহ সকলকে নিয়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ সফলভাবে অর্জন করতে হবে। অস্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৩৫.৩৬ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে শিল্প উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। উল্লেখ্য ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-এ বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ১৬ টি-বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস্ লিমিটেড, আরএফএল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইস্পাহানি টি লিমিটেড, নাটোর এগ্রো লিমিটেড, প্লামি ফ্যাশনস্ লিমিটেড, ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড, জেনেসিস ওয়াসিং লিমিটেড, আরএফএল প্লাস্টিকস্ লিমিটেড, ডিউরেবল প্লাস্টিক লিমিটেড, আকিজ জুট মিলস্ লিমিটেড, আইয়ান জুট মিলস্ লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ব্রেইন স্টেশন ২৩ লিমিটেড, হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেডকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৮টির মধ্যে গেট ওয়েল লিমিটেড, নর্দান ফ্লাওয়ার মিলস্ লিমিটেড, রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, কনসেপ্ট নীটিং লিমিটেড, বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, প্যাকম্যাট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড, কিউ এন এস শিপিং লজিস্টিকস্ লিমিটেডকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটির মধ্যে এসআর হ্যান্ডিক্রাফটস্ ও রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেডকে দেয়া হয় পুরস্কার। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটির মেধ্য মাসকো ডইরী এন্টারপ্রাইজ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টির মধ্যে গাজী ওয়্যারস্ লিমিটেড, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ইনস্টিটিউশনাল এপ্রিসিয়শেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-এ ট্রেডবডি ও অ্যাসোসিয়শন ক্যাটাগরিতে দুটি- বাংলাদেশ এ সপ্লায়ার্স ফেডাশেন ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু, করপোরেশনের পরিচালক (বিপনন) আনোয়ার হোসেন, পরিচালক (উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ) প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন, কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু সাঈদ, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শেখ শাহব উদ্দীন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অতিথিদের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা মো. আবু সাঈদ।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More