স্টাফ রিপোর্টার: সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর অন্যান্য দলও এভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় সরকার এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা মূল দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে না। গতকাল সোমবার মধ্যরাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকা-, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি বলেও জানিয়েছে সরকার। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ১২ মে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয় বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। উক্ত আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ (এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন) কর্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকা- নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, উক্ত প্রজ্ঞাপন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না। আওয়ামী লীগ, এর কোনো কর্মকা-, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত প্রায় ১৫ বছর বিশেষ করে গত বছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা গুম, খুন, অমানবিক নির্যাতন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। উল্লিখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে উপরোক্ত সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনগুলো কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলা ও উসকানি প্রদানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত করা হচ্ছে। এতে বিশেষ করে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও এভাবে বিচার এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে গতকালের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.