আগামী সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস : প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা

ঘণ কুয়াশায় আবছায়া-ঝাপসা দৃশ্যপটে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন
স্টাফ রিপোর্টার: টানা পাঁচ দিন সূর্যের দেখা নেই। মধ্য দুপুরেও ধূসর থাকে আকাশ। সন্ধ্যা নামার আগেই দিনের আলো নিভে যাচ্ছে। ল্যাম্পপোস্টের আলোও ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাঁদরে। প্রভাতে শিশিরে ভিজে থাকছে পথমালা, পত্রপল্লব। সড়ক-মহাসড়কে চারদিকে আবছায়া-ঝাপসা দৃশ্যপটে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। দেশের প্রায় সর্বত্রই অভিন্ন দৃশ্যপট। দেশের কোনো কোনো স্থানে মাঝেমধ্যে তেজহীন সূর্যের দেখা মিললেও অধিকাংশ সময়ই মিলছে না। রয়েছে হিমেল হাওয়া। রাতে তো বটেই, দিনের বেলাতেও এখন গরম কাপড় পরে বাইরে বেরুতে হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, অগ্রহায়নের এই সময়ে কুয়াশা ও শীতের এ পরিস্থিতিকে পুরো স্বাভাবিক বলা যায় না। হঠাৎ করে ধারণাতীত ঠান্ডা পড়ছে। আগামী দিনগুলোতে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। স্বাভাবিকভাবেই শীত বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের মাত্র পাঁচটি অঞ্চল বাদে সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ১৯ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর বেশিরভাগ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯ থেকে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চট্টগ্রাম বিভাগের সীতাকুন্ডে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি, ময়মনসিংহে ১৫ দশমিক ৬, চট্টগ্রামে ১৭ দশমিক ৪, সিলেটে ১৬ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ১৬, রংপুরে ১৬ দশমিক ৩, খুলনায় ১৬ এবং বরিশালে ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিলো ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো কক্সবাজারে ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, সূর্যের আলো পড়ছে না, দিনের বেলা তাপমাত্রা খুব কম থাকছে। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা আসলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। শৈত্যপ্রবাহ না বইলেও শীতের অনুভূতি বেড়ে গেছে। আগামী ১৭ থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এই মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে হালকা বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও এর আশেপাশের এলাকা পর্যন্ত অবস্থান করছে। এর প্রভাবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য এলাকায় মাঝারি থেকে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। কুয়াশার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে ফেরি চলাচল। আজ সকাল ১০টা থেকে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে দেশের নদী অববাহিকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৪০০ মিটার অথবা কোথাও কোথাও এর চেয়ে কম হতে পারে। এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জানুয়ারিতে বাড়বে শীতের তীব্রতা। জানুয়ারিতে অন্তত দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এই অঞ্চলে। এর মধ্যে অন্তত দুটি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে তীব্র। তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More