আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কে জনদুর্ভোগ চরেম : দুবছরেও কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার

চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে পড়া সড়কের সংষ্কার দাবিতে মানববন্ধনসহ পদস্থ কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও মেলেনি প্রতিকার

স্টাফ রিপোর্টার: দু বছর আগে ঠিকাদারের কার্যাদেশ দেয়া হলেও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কটি প্রসষÍ ও পাকাকরণের সার্ফেসিঙের কাজ শুরু হয়নি। কালভার্ট করা হলেও জনগুরুত্বপুর্ণ সড়কটির কোথাও পিচ উঠে খোয়া বের হয়ে আছে। কোথাও পিচ-খোয়া দুই-ই উঠে গেছে। ওই সড়কে চলাচলকারিদের দূর্ভোগের যেনো শেষ নেই। ফলে দুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসী মানবন্ধন করে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও প্রতিকার মেলেনি। অথচ কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার কথা আগামী জুনের মধ্যে।
দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কের ১৩ দশমিক ১৬ কিলোমিটার অংশের এ বেহাল অবস্থা। গত ২ বছর আগে সড়কটি প্রশস্ত ও নতুন করে পাকাকরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু আজও ওই সড়কের কোন কাজ শুরু করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ব্যবস্থা নেয়নি সড়ক বিভাগও। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য মানববন্ধনও করেছে এলাকাবাসী। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকেই দুষছেন স্থানীয়রা। তাদের উদাসীনতার জন্যই সড়কের এমন দশা বলে অভিযোগ ওই এলাকার জনসাধারণের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলা শহর থেকে হারদি এলাকার মধ্যদিয়ে যাওয়া সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ভাঙা ও খানাখন্দকে ভরা সড়কটি দিয়ে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকসা-ভ্যান, ইজিবাইক, আলমসাধু, নসিমন, বাস ও ট্রাক চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। সড়কের হারদি অংশে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে রোগীদের। ঠিক সময়ে রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারছেনা স্বজনরা। সড়কের বেহাল দশার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রাও।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বামুন্দী-হাটবোয়ালিয়া-আলমডাঙ্গা ১৩.১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত ও নতুন করে পাকাকরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র বিবেচনায় কাজটি পায় ময়মনসিংহ জেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিজভী কনস্ট্রাকশন। পরে কাজটি কিনে নেয় চুয়াডাঙ্গার ৩জন ঠিকাদার কাজটি কিনে নেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি সড়কের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে একবার সময় বাড়ানো হয়েছে। ওই সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে চলতি বছরের ৩০ জুন। এ সময়ের মধ্যে আদৌ কাজ সম্পন্ন করা হবে কিনা তার কোনই নিশ্চয়তা নেই। কেনো? জবাব মিলছে না। সড়ক বিভাগ থেকে আরও জানা গেছে, ১৩.১৬ কিলোমিটার সড়কটির কাজের ব্যয় ধরা হয় ২১ কোটি ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮ দশমিক ১৭ টাকা। সড়কটি ১২ ফিট চওড়া রয়েছে যা বাড়িয়ে ১৮ ফিট চওড়া করা হবে। ওই সড়কের মধ্যে ৪টি আরসিসি বক্স কালভার্ট রয়েছে। কালভার্টগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সার্ফেসিং এর কাজ বাকী রয়েছে।
আলমডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা তপন জানান, সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে হারদি বাজারে গত ১২ এপ্রিল বেলা ১১ টায় দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। ওই এলাকায় খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় কুমারি ভেটেনারি কলেজ, এমএস জোহা কলেজ, কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করতে খুব কষ্ট হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও এই এলাকায়। দূর দূরান্ত থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে আসতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগীর স্বজনদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করছেন। কিন্তু কিছু মানুষ এই উন্নয়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত ওই সড়কটির সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। হারদি এলাকার বাসিন্দা আলীম হোসেন জানান, এমনিতেই সড়কটি অপ্রশস্ত। তার ওপর পিচ-খোয়া উঠে গেছে। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করছে মানুষ। বিশেষ করে রোগীদের দূর্ভোগের অন্ত নেই। খুব সঙ্কটাপন্ন রোগীকে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিতে না পারায় মারা যাচ্ছে। এই দুর্ভোগ যে কবে লাঘব হবে? আল্লাহই জানেন। কবে নাগাদ সড়কের কাজ শুরু হবে? এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More