ইজিবাইক-ভ্যানের কারণে করোনা ঝুঁকিতে মেহেরপুর

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও ভ্যান চালকদের দাপট বেড়েছে। ফাঁকা সড়কে অনেকটাই বাধাহীনভাবে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে এসব যান। রোববার (১৯ এপ্রিল) সকালে মেহেরপুর জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এতে জেলায় করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেরপুর শহর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা শহরে ভ্যান ও ইজিবাইক অবাধে চলাচল করছে। মোড়ে মোড়ে ভিড় করে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকছেন চালকরা। জেলার সব সড়কে যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যাটারি চালিত এসব ইজিবাইক ও ভ্যানের কদর বেড়েছে বহুগুণ। এসব যান পুরো জেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গাদাগাদি করে বসে যাত্রীরা যাচ্ছেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যেন সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়টি ভুলে গেছেন সবাই।

কয়েকজন ইজিবাইক চালক বলেন, ‘অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। সড়কে অন্য কোনো যানবাহন নেই। তাই আমরা বেশি ভাড়া পাচ্ছি। এ কারণে অনেক ভ্যান ও ইজিবাইক চালক দিন রাত রাস্তায় থাকছেন।’

কাজ বন্ধ থাকায় ত্রাণ দেয়া হচ্ছে, তারপরেও কেন ঘর থেকে বের হচ্ছেন এমন প্রশ্নে মেহেরপুর শহরের ইজিবাইক চালক আলিম উদ্দীন বলেন, ‘ত্রাণ হিসেবে ১৫ কেজি চাল আর কিছু পণ্য পেয়েছি। যা দিয়ে ৬ জনের পরিবার চালাতে পারছি না। তাই রাস্তায় আসতে বাধ্য হচ্ছি।’

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। তবুও করোনা ঝুঁকি এড়াতে গত ২৫ মার্চ থেকে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় ভ্যান, রিকশা, ইজিবাইক, বিভিন্ন যানবাহন, দোকানপাট বন্ধ (জরুরি পরিসেবা ব্যতীত) ও চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন জেলা প্রশাসক আতাউল গনি।

এরপর আদেশ বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন দল মাঠে কাজ শুরু করে। কয়েকদিন কঠোরতা পালন হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিথিলতা দেখানোয় আবারো স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হয়েছে। বর্তমানে মেহেরপুর জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও ভ্যান চালকদের দাপট বেড়েছে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি জানান, করোনাভাইরাস রোধে জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন মেহেরপুর জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে তাদেরকে দণ্ড দেয়া হচ্ছে। এরপরেও মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। তিনি আরও জানান, জেলার প্রায় ৫ হাজার ভ্যান, রিকশা ও ইজিবাইক চালকের মাঝে সরকারি ত্রাণ দেয়া হয়েছে। তারা ঘরে থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আরও ত্রাণ দেয়া হবে। কেউ না খেয়ে থাকবে না।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন জানান, মেহেরপুর জেলা এখনো করোনাভাইরাস মুক্ত। এ অবস্থা ধরে রাখতে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। তাদেরকে ঘরে থাকতে হবে। এভাবে রাস্তায় চলাচল করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে সবার জন্য খারাপ কিছু হতে পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More