করোনাকালে কোরবানির পশুহাটে ক্রেতা না থাকলেও ফ্রিজের দোকানে ভিড়

চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ শো-রুম ম্যানেজারদের অভিন্ন অভিমত- গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা কম বিক্রি
আনোয়ার হোসেন: করোনার প্রভাবে কোরবানির পশুহাটে ক্রেতার সংখ্যা হতাশাজনক হলেও ফ্রিজের শোরুমগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গায় গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা বিক্রি কমলেও হতাশ নন টিভি ফ্রিজের শোরুমের ম্যানেজাররা। তাদের অধিকাংশেরই অভিমত, ‘করোনাকালে যতোটা মন্দা হবে ভেবেছিলাম, অতোটা নয়। বরঞ্চ প্রতিদিনই ২০/৩০টি ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। যা গতবারের তুলনায় সামান্য কম।’
পবিত্র ঈদুল আজহা আর মাত্র ৪ দিন বাকি। ১ আগস্ট দেশে উদযাপিত হবে ইসলাম ধর্মালম্বিদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। কোরবানির এ ঈদ সামনে রেখে প্রতিবারই ফ্রিজের দোকানে বিক্রি বাড়ে। কোরবানির পশুহাটে যেমন বাড়ে কেনা বেচার ব্যস্ততা, তেমনই হাট বাজারেও উপচেপড়ে ক্রেতা সাধারণের ভিড়। নোভেল করোনা ভাইরাস প্রায় সকল ক্ষেত্রেই স্থবিরতা এনেছে। কোরবানিকে সামনে রেখে যেসব খামারিরা গরু ছাগল পালন করেন, তাদের এবার লাভের বদলে গুণতে হচ্ছে লোকসান। এলাকার পশুহাটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা যেমন হতাশাজনক, তেমনই রফতানিকারক ব্যপারীদের উপস্থিতিও কম। অন্যান্যবার কোরবানির অনেক আগে থেকেই গ্রাম বাংলায় নামেন ব্যপারিরা। ঘরে ঘরে পালন করা গরু ছাগল কিনে ট্রাক ভিড়িয়ে বড় বড় শহরে নেন তারা। এবার তেমন ব্যাপারি নেই বললেই চলে। গ্রামের যারা সম্মিলিতভাবে ট্রাকযোগে গৃহপালিত পশু নেন বড় শহরে। তাদের মধ্যেও তেমন তোড়জোড় নেই। করোনার মধ্যে বড় শহরের হাটে যদি গরু বিক্রি না হয়! এরকম দুশ্চিন্তা তাদের উৎসাহে ভাটা পড়িয়েছে। অবশ্যই এই সুযোগে এলাকারই কিছু ব্যবসায়ী অল্পদামে গরু কেনার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এ ধরনের ক্রেতার কাছে গরু বিক্রি মানে নির্ঘাত লোকসান। ফলে খামারিদের অধিকাংশকেই ভালো ক্রেতার জন্য ছুটতে হচ্ছে এ হাট থেকে ওই হাটে। হাটগুলোতে খামারিরাা গরুর ন্যায্য দাম হাকলেও প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছেন। অপরদিকে গত দুদিন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ফ্রিজের শোরুমগুলোর দিকে দৃষ্টি দিয়ে পাওয়া গেছে ভিন্নচিত্র। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফ্রিজের খোদ্দের লেগেই আছে। এসব খোদ্দেরের অধিকাংশই গ্রামাঞ্চলের এবং নারী। শহরের শোরুমগুলোর মধ্যে মাইওয়ান মিনিস্টার শোরুমের ব্যবস্থাপক কামরুজ্জাান বললেন, আমাদের শো রুমে ১৫ হাজার ৯শ টাকা থেকে ৮৫ হাজার টাকার ফ্রিজ রয়েছে। তবে মধ্যমানের ফ্রিজই বেশি বিক্রি হচ্ছে। মিনিস্টার ফ্রিজ কিনলেই দিচ্ছি নানা সুবিধা। কোটি কোটি টাকার গিফট ভাউচার রয়েছে আমাদের। মাইওয়ান শোরুমের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বলেছেন, ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা মূল্যমানের ফ্রিজ রয়েছে। প্রতিটি ফ্রিজেই কোরবানি উপলক্ষে ১২ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। ওয়ালট শোরুম ব্যবস্থাপক মো. রতন বললেন, ১৮ হাজার থেকে শুরু করে ৬৪ হাজার টাকার ফ্রিজ রয়েছে। কোরবানীর সামনে করে বেচা বিক্রি ভালোই হচ্ছে। এলজি শো-রুমের ব্যবস্থাপক রিপন আলী বললেন, আমাদের শো- রুমে ২৬ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার ফ্রিজ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ও রয়েছে। স্যামসং শোরুম ম্যানেজার ইফতিয়ার আহমেদ বললেন, ১৫ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা দামের ফ্রিজও রয়েছে। বিভিন্ন অফারও রয়েছে আমাদের। যমুনা শোরুমের ম্যানেজার রফিকুল হাসান বললেন, ২০ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৩৬ হাজার ৮শ’ টাকা মূল্যের ফ্রিজ রয়েছে। ক্রেতাদের অর্থছাড়ের সুযোগও রয়েছে আমাদের। সিঙ্গার প্লাস শোরুমের ম্যানেজার হামিদুর রহমান বললেন, ১৫ হাজার ৩৪৩ টাকা থেকে ৯৪ হাজার ৯৯০ টাকা মূল্যের ফ্রিজ রয়েছে। ৮ শতাংশ ছাড়ের অফার রয়েছে আমাদের। মাইচয়েজ শোরুমের ম্যানেজার কারমুল ইসলাম বললেন, ১৮ হাজার থেকে শুরু করে ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের ফ্রিজ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে আমরা ছাড় দিচ্ছি ১৩ শতাংশ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More