করোনা ঝুকি উপেক্ষা করে বেতনের দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের রাজধানীতে বিক্ষোভ

ঢাকা অফিস: বেতনের দাবিতে রাজধানী ঢাকায় গার্মেন্ট শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।এপ্রিলের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও মালিকরা মার্চ মাসের বেতন এখনও পরিশোধ না করায় তারা করোনার ভয় উপেক্ষা করে রাস্তায় নামে। তারা বলেছে, নিরুপায় হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর আশুলিয়া,উত্তরা,বাড্ডা, ভাটারা,মিরপুর,ভাষানটেক,শাহআলি,তেজগাঁও,মতিঝিল এলাকায় শতশত শ্রমিক বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামে। দেড় দুই-ঘণ্টা অবস্থানের পর সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিকদের আশ্বাসের ভিত্তিতে শ্রমিকদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরানো হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মহামারী ছড়ানো ঠেকাতে সরকার ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বেশিরভাগ তৈরি পোশাকের কারখানাও এখন বন্ধ রয়েছে। তবে সরকার এরই মধ্যে কারখানার শ্রমিকদের বেতনের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে মালিকদের। ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পরিশোধ না করলে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। ঢাকার আশুলিয়ায় এসএমএস গার্মেন্টসের সামনের সড়কে বুধবার সকাল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর‌্যন্ত অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন বলে তুরাগ থানার ওসি মুত্তাকিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন,“পরে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়,মালিকের সাথে কথা চলছে। দক্ষিণখানের হাজী রোডে স্যার ডেনিম কারখানার শ্রমিকরা সামনের রাস্তায় বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্দ অবস্থান করছিল। পরে মালিকপক্ষ বেতন দিতে রাজি হওয়ায় তারা চলে যায় বলে দক্ষিণখান থানার ওসি সিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন জানান। বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ বলেন, প্রগতি সরণি এলাকায় শমসের রাজিয়া নামের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।“মালিকের সাথে কথা বলে ২০ এপ্রিলে বেতন পাওয়া আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা রাস্তা ছাড়ে।” ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু আজিফ জানান,সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কুডিল এলাকার ক্লাসিক গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা বেতনের বিক্ষোভ করে। তারাও ২০ এপ্রিল বেতন পাওয়ার আশ্বাসে রাস্তা ছাড়েন। মিরপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) দুলার হোসেন মিডিয়াকে বলেন,দারুসসালাম এলাকার এমইসি গার্মেন্টস শ্রমিকরা গাবতলী এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে। তবে মালিকপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় মিরপুর ১০ নম্বরে শাকিব গার্মেন্টস শতাধিককর্মী এখনো সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বলে মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিজুর রহমান জানান। এদিকে কাফরুল এবং ভাষানটেকের মাঝামাঝি কচুক্ষেত এলাকার চিটাগাং গার্মেন্টসের শ্রমিকরাও রাস্তায় নেমে প্রায় দেড় ঘন্টা বিক্ষোভ করে। ভাষানটেক থানার ওসি সাব্বির আহমেদ একটি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, কারখানার মূল মালিকের কাছ থেকে অপর এক ব্যাক্তি ভাড়া নিয়ে কাজ চালায়। পরে সেই মালিকের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের সাথে বসিয়ে দেওয়া হয়। মলিক তাদের আশ্বস্ত করার পর শ্রমিকরা চলে যায়। স্থানীয় ছোট ছোট কয়েকটি গার্মেন্টসের প্রায় দেড়শত শ্রমিক মিরপুর ২ নম্বরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বলে শাহ আলী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান। তিনি বলেন, “কয়েকজন মালিকের সাথে কথা বলে তারা খুব শিগগরিই বেতন দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর শ্রমিকরা চলে যান।” কারওয়ান বাজারের কাঠপট্টিতে ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স নামের গার্মেন্টস শ্রমিকরা সকালে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে বলে জানান তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাসনাত খন্দকার। তিনি বলেন,শ্রমিকদের বুঝিয়ে গার্মেন্টেসের ভেতরে নেওয়া হয়েছে। মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মতিঝিল থানা এলাকার দক্ষিণ কমলাপুরে বিন্নি গার্মেন্টস এবং সরদার নিট অ্যান্ড ওয়্যার নামে অপর একটি গার্মেন্টসের দুই শতাধিক শ্রমিক বুধবার সকালে কমলাপুর এলাকার সড়কে অবস্থান নেয়। বেতন ভাতার জন্য বিক্ষোভ করে। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন বলেন,দুইটি গার্মেন্টসের অবস্থান প্রায় কাছাকাছি। প্রায় দেড় দুই ঘন্টা ধরে বুঝানোর পর তারা চলে যায়। “তবে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি,কেউ ফোন ধরেনি। কারো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে,বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা আবার আসতে পারে।” এদিকে সকালেও কল্যাণপুরে একটি গার্মেন্টসের কর্মীরা বিক্ষোভ করেছিল।পরে তাদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

 

 

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More