গলিত লোহা শরীরে পড়ে চুয়াডাঙ্গার মিজানুরসহ দুজনের মৃত্যু : দগ্ধ ৪

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রড প্রস্তুতকারক কারখানায় কাজ করতে গিয়ে বিপত্তি

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি রড প্রস্তুতকারক কারখানায় গলিত লোহা শরীরে পড়ে চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ার মিজানুর রহমানসহ দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও চারজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় দুই শ্রমিক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার বরপা এলাকার প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিল কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান (৪৫) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া বাজারপাড়ার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। নিহত অপর শ্রমিক ফাহিম হোসেন (২৫) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আকবর হোসেনের ছেলে।

এ ঘটনায় দগ্ধরা হলেন পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে শাকিল (২০), একই উপজেলার বাউরা এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৪৫), রহমতপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে রাজু (৪০), কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার টিপু শেখের ছেলে আবু সিদ্দিক (৩০)। তারা সবাই ওই কারখানার ফার্নিশ বিভাগের অপারেটর ছিলেন। শুক্রবার সকালে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে যাওয়া রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাহিদ হাসান ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক জানান, বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে কারখানার একটি চুল্লিতে লোহা তৈরির জন্য ভাঙারির বান্ডিল গলানো হচ্ছিলো। এ সময় বান্ডিলে থাকা কোনো একটি বস্তু বিস্ফোরিত হলে গলিত লোহা এসে শ্রমিকদের শরীরে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই মিজানুরের মৃত্যু হয়। পরে মালিকপক্ষের লোকজন আহত পাঁচ শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কাজ করার সময় দগ্ধ শ্রমিকদের গায়ে কোনোপ্রকার সুরক্ষা পোশাক ছিলো না বলে জানান তারা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, দগ্ধ হয়ে পাঁচ শ্রমিক হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেল চারটার দিকে ফাহিম নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শাকিল ও আবু সিদ্দিক নামের আরও দুজন শ্রমিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের শরীরের প্রায় ৯৯ ভাগ পুড়ে গেছে। বাকি দুজন শ্রমিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

মিজানুরের ভাতিজা সজিবুর রহমান মনির জানান, ভোর পাঁচটায় এক শ্রমিক ফোন করে তার চাচা মিজানুরের মৃত্যুর খবর জানান। তারপর থেকে মালিকপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯এ কল করেন। মিজানুরের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মিজানুর প্রায় ১৫ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করেছিলেন। আগামী মাসে বাড়ি ফিরে গিয়ে গ্রামে রডসিমেন্টের ব্যবসা দেয়ার কথা ছিলো তার।

রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দিন বলেন, মিজানুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেয়া মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও মালিকপক্ষের কেউ ফোন ধরেননি।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
1 টি মন্তব্য
  1. Shojib বলেছেন

    Right Work

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More