গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ : গাংনী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আটক

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে (৫২) আটক করেছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে করে গুলি বর্ষণের ঘটনায় তাকে আটক করেছে গাংনী থানা পুলিশ। গুলি বর্ষণের ঘটনায় মোশাররফ হোসেনকে গ্রেফতারের দাবিতে নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধের প্রেক্ষিতে তাকে আটক করে পুলিশ।

নেতাকর্মী ও পুলিশসূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান সিপুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মোশাররফ হোসেনের বাকবিত-া বাধে। গাংনী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেটে মোশাররফ হোসেনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে এ নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে সাইফুজ্জামান সিপুসহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে পরপর চার রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে মোশাররফ হোসেন। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গুলির ঘটনায় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা তার অফিসে হামলা করে। এর এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে মোশাররফ হোসেনের গ্রেফতারের দাবি জানান। অবরোধের কারণে প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মোশাররফ হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কেন গুলি করেছে এবং তার অস্ত্রের লাইসেন্স আছে কি না তা যাচাই করার জন্য মোশাররফ হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

এদিকে নেতাকর্মীদের আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল।

এ বিষয়ে এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল বলেন, গাংনীতে বেশ কিছুদিন ধরে নানা রকম বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে মোশাররফ হোসেন, ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, ইসমাইল হোসেন ও মজিরুল ইসলাম। মোশাররফের  অফিসে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সব সময় লোকজনকে ভয়ভীতি দেখায়। যা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এদেরকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে।

এদিকে মোশাররফ হোসেন আটকের পরও রাস্তা ছাড়েনি নেতাকর্মীরা। তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ পুলিশের অনুরোধে সড়ক ছেড়ে দিয়ে বাসস্ট্যান্ডের শহীদ রেজাউল চত্বরে অবস্থান নেয়। সেখানে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, যুবলীগ নেতা রাহিবুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান সিপু, জেলা ছাত্রলীগ সাধালণ সম্পাদক মুনতাছির জামান মৃদুল ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টুসহ নেতৃবৃন্দ। এ প্রতিবাদ সভায় মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন বক্তারা।

তারা বলেন, মোশাররফ হোসেন ও ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন দলীয় যে পরিচয় দেয় তা অবৈধ। তাদের সাথে আছে ইসমাইল হোসেন ও মজিরুল ইসলাম। এ চারজনের বিরুদ্ধে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করে দলের পক্ষে ভোট করার একাধিক নজীর আছে। তাছাড়া তারা যে কমিটির পরিচয় দেয় তা অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ। কাজেই তারা দলের যে পরিচয় দিয়ে দলের লোক দাবি করে তা সঠিক নয়। তাদের কর্মকা-ে দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে।

এদিকে মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ বাণিজ্য এবং পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ করেন বক্তারা। দীর্ঘদিন ধরে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকলে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও বিদ্যালয় ধ্বংসের অভিযোগ করেন বক্তারা।

এদিকে সমাবেশ থেকে প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পরবর্তী আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More