চুয়াডাঙ্গার ওই নারী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত নন : ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় চর্মরোগ 

তাৎক্ষণিক গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে বলেছে

স্টাফ রিপোর্টার: মেডিকেল বোর্ড ওই বৃদ্ধার শরীরে থাকা ফুস্কা দেখে জানিয়েছে, ওটা মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ নয়। তাহলে একদিন আগেই ওই নারী মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত হওয়ার উপসর্গে ভুগছেন বলে একজন মেডিকেল অফিসার কীভাবে ধারণা করলেন? এ প্রশ্নের জবাব খোঁজার পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে থাকা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার নমুনা সংগ্রহ করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত নেয়ার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক নারীর অসুস্থতার বর্ণনা শুনে এবং দেখে মেডিকেল অফিসার মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ বলে মন্তব্য করেন। তাকে হোম আইসোলেশনে থাকারও পরামর্শ দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। রাতে অবশ্য সিভিল সার্জন জানান, যে নারী মাঙ্কিপক্সের উপসর্গে ভুগছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার সাথে বিদেশী কারো কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তেমন কারোর সংস্পর্শেও থাকেননি। তাহলে মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত হলেন কীভাবে? তবুও মেডিকেল অফিসার যখন বিষয়টি সন্দেহ করছেন সেহেতু তাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে। তেমন কিছু মনে হলে স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে ঢাকায় নেয়া হবে। এদিকে গতকাল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে আলোচনা করে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। এ বোর্ডের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন বলেছেন, পর্যবেক্ষণে থাকা নারীর শরীরের ফোসকা নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ পায়নি। এটকে ওষুধের পাশর্^ প্রতিক্রিয়াজনিত একধরণের চর্মরোগ মনে হওয়ায় তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মতামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের ওই নারীকে গতকাল শুক্রবার সকালে তার বাড়ি থেকে সদর হাসপাতালের তৃতীয়তলার একটি কক্ষে নেয়া হয়। ওখানেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ওই কক্ষেই রাখা হবে তাকে। গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের পরামর্শক ওয়ালিউর রহমান নয়ন ও ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সোহরাব হোসেন। পরীক্ষার জন্য রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসক ওয়াহিদ মাহমুদ জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার তাকে জ্বর-ব্যথার ওষুধ দিয়ে সদর উপজেলার নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মেডিকেল বোর্ডের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘রোগীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে এটি মাঙ্কিপক্স বা কোনো পক্সই নয়। তার শরীরে যে ধরনের ফোসকা দেখা গেছে, তা সাধারণত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হয়ে থাকে। এটা এক ধরনের চর্মরোগ।’ আবুল হোসেন আরও বলেন, ওই নারীর চিকিৎসার জন্য চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে স্বজনদের কাছে ফিরবেন। এটা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More