চুয়াডাঙ্গার ডিহি গ্রামে বাড়ির রাস্তা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ : ছোট ভাইয়ের হাতে বড়ভাই নিহত : ভাতিজা গ্রেফতার

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার ডিহি গ্রামে ছোট ভাইয়ের হাতে বড়ভাই নিহত হয়েছেন। বাড়ির জমিজমা নিয়ে বিরোধে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কাউছার আলী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিহি গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। গত সোমবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কাউছার আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। অন্য অভিযুক্তরা গাঢাকা দিয়েছেন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন ডিহি গ্রামের মানিকতলাপাড়ায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে তিন ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৃত আব্দুর রহমানের তিন ছেলে কাউছার আলী (৪৮), নাছের আলী (৪০) ও তাছের আলীর (৩৫) মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা বাঁশ, লোহার রড় ও কোদাল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষ রক্তাক্তভাবে আহত হন কাউছার, নাছের, তাছের, নাছেরের স্ত্রী হাছেনা বেগম (৩২), ছেলে আকাশ (২০), তাছেরের স্ত্রী চায়না বেগম (৩০), কাউছারের দু’ছেলে রুবেল (২৫), রকিসহ (২০) আটজন। এদের মধ্যে ৫ জনকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও তিন ভাই কাউছার, নাছের ও তাছেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ দিনের মাথায় গতকাল শনিবার বড়ভাই পাকিভ্যান চালক কাউছার মারা যান। নিহত কাইছারের লাশ গতকালই সন্ধ্যার দিকে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে আনা হয় বাড়িতে। রাত ৯টার দিকে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউছারের বড় ছেলে রুবেল বাদী হয়ে দর্শনা থানায় চাচা নাছের, তাছের, চাচি চায়না, হাছেনা ও চাচাতো ভাই আকাশকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হিজলগাড়ি ক্যাম্প পুলিশ এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আকাশকে গ্রেফতার করে দর্শনা থানায় সোপর্দ করেছে। গতকাল কাউছারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত আসামিরা গাঢাকা দেয়।
এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, বাড়ির সাড়ে ৭ কাঠা জমি নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। কয়েকবার মাপজোপ করা হয়। মাপজোক করে আমিন চলে গেলে শুরু হয় তুমুল ঝগড়াঝাটি। কেউ ঝগড়াঝাটি থামাতে গেলে তাদেরকে বাজে ভাষায় গালমন্দসহ মারমুখী আচরণ করতে থাকে পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে তাদের ঝগড়াঝাটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। ঘটনার দিন প্রথম মারামারির পরপরই আহত কাউছারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় পুনরায় তার ওপর নাছেরের ছেলে আকাশ কোদাল দিয়ে ও তাছেরের স্ত্রী চায়না বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে কাউছার সজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। কাউছারের মাথায় কোদাল ও বাঁশের আঘাতগুলো ছিলো খুবই গুরুতর। কাউছার গরিব মানুষ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি। তিনি এক সাপ্তাহ ধরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় কাতরালেও অন্য ভাইরা তাকে চোখের দেখা পর্যন্ত দেখেননি। এ ব্যাপারে দর্শনা থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজল বলেন, হত্যা মামলায় এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More