চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের ১৫ জেলায় ১১৯ মানব পাচারকারী

প্রমাণ থাকার পরও ৪৮ জনকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অন্তত ১৫ জেলায় ১১৯ জন মানব পাচারকারীর খোঁজ পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এদের মধ্যে ৪৪ জনই মাদারীপুর আর কিশোরগঞ্জ জেলার। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা লিবিয়া হয়ে ইউরোপে মানব পাচারে জড়িত।
মাদারীপুর ও কিশোরগঞ্জ ছাড়াও ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল ও বরগুনা জেলায় মানব পাচার চক্রের এসব সদস্যের খোঁজ মিলেছে। লিবিয়া ও ইউরোপে মানব পাচারের নেটওয়ার্ক সক্রিয়ভাবে জড়িত এমন প্রমাণ থাকার পরও ৪৮ জনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছেন সিআইডির তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় বাদ দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা জিম্মি দশায় রেখে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে হওয়া ২৫ মামলার তদন্তে ওই সব পাচারকারীর তথ্য উঠে এসেছে। এরই মধ্যে সিআইডি আদালতে ২৫ মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে। ওইসব অভিযোগপত্রে যেসব পাচারকারীর নাম উঠে এসেছে তারা হলেন- মাদারীপুর সদরের দিনু শেখ ও তার স্ত্রী প্রভা বেগম, একই জেলার রাজৈরের জাহিদুল শেখ, জাকির হোসেন মাতুব্বর, জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর, আমির শেখ (থাকেন লিবিয়ায়), তার ভাই ইমাম হোসেন শেখ, নূর হোসেন শেখ, তার স্ত্রী চম্পা বেগম ও ভাই আকবর শেখ, আমিরের স্ত্রী রাশিদা, একই এলাকার জুলহাস সরদার, রেজাউল বয়াতী, নাসির বয়াতী, হানিফ বয়াতী, তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম, হাইসদীর নজরুল মোল্লা, তার স্ত্রী দিনা বেগম, আ. বারেক ফরাজী, পাঠানকান্দির বুলু বেগম, কালকিনির কামাল হোসেন খান ও শিবচরের জাহাঙ্গীর হোসেন। আর কিশোরগঞ্জের ভৈরবের হযরত আলী, তার ছেলে সজীব (থাকেন লিবিয়ায়), সুজন মিয়া, সঞ্জিত, জাফর (থাকেন লিবিয়ায়), তার ভাই শাকিল, সুজন, কাউসার, মামুন ওরফে মানিক, নাজমুল হাসান, তানজিলুর ওরফে তানজিদ, বাহারুল ওরফে বাচ্চু মিলিটারি, জাফর ওরফে জাফর ইকবাল, স্বপন, মিন্টু মিয়া, হেলাল ওরফে হেলু মিয়া, হাজি শহিদ মিয়া, খবির উদ্দিন, মোমেন মিয়া, জ্যোতি নূর শাওন, রুপা বেগম ও পারুল বেগম।
এছাড়া অন্য জেলার মধ্যে আছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর আশরাফ হোসেন রনি, গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়ার শাওন খান, মুকসুদপুরের মোসলেম শেখ, তাইমুল ইসলাম সায়েম, রব মোড়ল ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগম, সুন্দরদীর লিয়াকত শেখ, লোহাইড়ের বশির শিকদার, কানুরিয়ার সেন্টু শিকদার, কুষ্টিয়ার কামাল উদ্দিন ওরফে হাজি কামাল ও আলী হোসেন, শরীয়তপুরের পালংয়ের সাদ্দাম মোল্লা, নীলফামারীর ডিমলার আবদুল্লাহ ওরফে আসাদুজ্জামান, সুনামগঞ্জের দাদা সিলেট ওরফে এনাম তালুকদার, জগন্নাথপুরের সানোয়ার হোসেন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের সামিম হোসেন, ফরিদপুরের নগরকান্দার মোশারেফ হোসেন, শাহাদাত হোসাইন, আবদুল আউয়াল ভূঁইয়া, কাউসার, মাসুম, মহসীন রানা, নজরুল ইসলাম সুমন, আসাদুল জামান ওরফে আবদুল্লাহ, কামাল হোসেন, সাঈদ ঢালী, মনির হোসেন হাওলাদার, মহাসিন হাওলাদার, খোকন হাওলাদার, বাদশা ফকির, কবির, শরিফুল ইসলাম ওরফে শরীফ, মুন্না মাল (থাকেন লিবিয়ায়), রহিম বেঙ্গলী ওরফে আবদুর রহিম, আলামিন, রুবেল শেখ, সাইফুল, নেছার উদ্দিন হাওলাদার, জোবর আলী, শাহিন বাবু (পল্টনের স্কাই ভিউ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক), হেলাল মিয়া, সজীব মিয়া, মুন্নী আক্তার রূপসী, পারভেজ হাসান, কাউছার মুন্সি, মাহাবুব মুন্সি, পারভেজ আহমেদ, নজরুল ইসলাম সুমন, রবিউল মিয়া ওরফে রবি, ইলিয়াছ মীর, শরীফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম সেলিম, খালিদ চৌধুরী, সানজিদা, আবদুস সাত্তার, নুরজাহান আক্তার, জাকির মিয়া, মোক্তার মোল্লা, রাসেল, মঞ্জুর হোসেন রুবেল মির্জা, নাসির উদ্দিন মির্জা ওরফে রোম্মন, রিপন মির্জা, আবু বক্কর মিয়া, সোহেল পাজরী, আসাদুজ্জামান বাবু, কবির হোসেন, হারুন আহমেদ, মোজাম্মেল হোসেন পাটোয়ারী, আবুল হোসেন ওরফে সোহাগ, সেলিম সিকদার, কবির হাওলাদার, নাসির উদ্দিন ওরফে নেছার, আবুল কালাম হাওলাদার, সাব্বির হোসেন ও গিয়াস মাতব্বর। এরা লিবিয়া ও ইউরোপে মানব পাচারের জন্য অন্তত ১৮টি চক্র গড়ে তুলেছেন বলে জানা গেছে। সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম ও হোমিসাইডাল স্কোয়াডের বিশেষ পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান খান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘অভিযুক্ত এসব আসামির সবাই এখনো গ্রেফতার হননি। এদের অনেকে বিদেশে পলাতক। যারা পলাতক তাদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আর নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি, নাম-ঠিকানা পেলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হবে।’ অভিবাসন খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিআইডি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে, তারা দালাল কি না দেখতে হবে। তারা যদি দালাল হন, তাহলে মানব পাচার বন্ধ হবে না। তারা বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে জঙ্গিবাদ যেভাবে দমন করা হয়েছে, মানব পাচার প্রতিরোধেও তেমন শক্ত উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই মানব পাচারও নিয়ন্ত্রণে আসবে। সিআইডির তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাচার চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে লিবিয়ায় মানব পাচার করছেন। লিবিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি চক্র ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে ঝুঁকিপূর্ণ মানব পাচার করছে। প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরে যারা টাকা ফেরত পান, তারা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আগ্রহী হন না। কিছু ব্যক্তি মামলা করলেও মানব পাচারকারীর পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা দেন না। এদিকে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কিশোরগঞ্জের যুবক আকাশ। তার ভাই নাজির হোসেন পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, তিনি ঢাকার মানব পাচারকারী হাজি কামালের মাধ্যমে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে লিবিয়ায় যান। সেখানে অল্প টাকা বেতন পেতেন। লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের হোতা তানজিদুল ত্রিপোলিতে বেশি বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা নিলেও সেখানে পাঠাননি। ২০২০ সালের ২০ মে আকাশের কাছ থেকে অডিওবার্তায় তিনি জানতে পারেন, ১২ হাজার ডলার মুক্তিপণের জন্য আকাশকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হচ্ছে এবং রড দিয়ে পেটানো হচ্ছে। পরে তিনি তানজিদুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে আকাশের জন্য তার কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এরপর ২৮ মে গণমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন মুক্তিপণ না পেয়ে আকাশকে হত্যা করা হয়েছে। এর জন্য তানজিদুলকে দায়ী করেন নাজির হোসেন।
সিআইডিসূত্র জানায়, ২৫ মামলার মধ্যে ২০২০ সালের ৩১ মে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৪৫। এর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে গত বছর ১ মে। একই বছর ২ জুন রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-১। এর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে গত বছর ২৮ এপ্রিল। ৫ জুন পল্টন থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৪। এর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে গত বছর ১৯ মে। ২০২০ সালের ৪ জুন রাজধানীর বনানী থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-২। একই বছর ফরিদপুরের সালথা থানায় ১ জুন একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-২। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ৮ এপ্রিল। ২০২০ সালের ৩১ মে মাদারীপুরের সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৪৩। রাজৈর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-১৯। ২ জুন একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৩। ৩ জুন একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৪। এসব মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ৪ মে, ২৭ মে ও ৩ মে। ২০২০ সালের ১১ জুন রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৯। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ২৩ মে। ২০২০ সালের ৬ জুন রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-২। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ২৭ জুন। ২০২০ সালের ৪ জুন রাজধানীর পল্টন থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৩। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ৬ জুন। ওই বছর ৭ জুন পল্টন থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৭। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ৯ জুন। ২০২০ সালের ৬ জুন রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৬। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ৮ এপ্রিল। ২০২০ সালের ৮ জুন মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৯। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই বছর ১, ৪, ৮, জুন রাজৈর থানায় ৪টি মামলা হয়। মামলা নম্বর-১, ৭, ৬ ও ১০। এসবের অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে গত বছর ১১ মে, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ৯ ফেব্রুয়ারি ও ৮ ফেব্রুয়ারি। ২০২০ সালের ১ জুন গোপালগঞ্জের মোকছেদপুরে একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-১। একই বছর ৪ জুন আরেকটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-২। এসবের অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ১ মার্চ। ২০২০ সালের ১ জুন মাগুরার মহম্মদপুরে একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-১। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি। ওই বছর ৭ জুন হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৮। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে একই বছর ১৬ অক্টোবর। ২০২০ সালের ৬ জুন যশোরের ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর-৫। এর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গত বছর ২৪ জুন।
সাক্ষী-প্রমাণ না পাওয়ায় যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে : দেশের বিভিন্ন থানায় করা ২৫ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছিল কিন্তু সাক্ষী-প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন হবিগঞ্জের আবদুল মান্নান, সিলেটের কুতুব উদ্দিন, রুবেল আহম্মেদ, রানা মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরার রুহুল আমিন, লিয়াকত ওরফে লেকু, এনামুল হক গাজী ওরফে এনাম গাজী, শেখ সাহিদুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, সাদ্দাম, কুদ্দুস বয়াতী, লালন ও সাহেদা বেগম।
পাচারে জড়িত তবু বাদ: লিবিয়ায় মানব পাচারে জড়িত, কিন্তু পূর্ণ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় অন্তত ৪৮ জনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন দুবাইয়ে অবস্থান করা আফ্রিন আহমেদ। এ ছাড়া জনার্দ্দন ওরফে দাদা, শ্যামল, ফারুক, রাহাত, আরিফ, শাকিল, ইতালিতে অবস্থান করা মানিক, সোহাগ হোসেন ওরফে দিল্লি সোহাগ, সামসুল, সেলিম ওরফে সাউথ সেলিম, সাদ্দাম হোসাইন, রাজন ওরফে বুলেট, মিরাজ হাওলাদার, কাজী শরীফ, হারুন, মোমিন, সনাতন দাশ ওরফে দাদা, কাজী ইসমাঈল হোসেন, আবদুর রহমান তৌহিদ, হোসাইন, হাকিম, জসীম, মনির ওরফে সিটি মনির, হাসান, ওসমান, সোলেমান, হেদায়েত, আবদুল্লাহ আল ফারুক ওরফে বাঁধন, চঞ্চল, কাজল, জুয়েল, মোখলেছ, মানিক, শারজায় অবস্থানকারী জসিম, আশরাফ, হেমায়েত, ওয়াসিম বাবু, নিজাম উদ্দিন, রহিম মিয়া, খান, মাহমুদুল হাসান, চপল, মনির হোসেন, তবিবুর রহমান, আলীম, ওয়াসিম ও দুবাইয়ে অবস্থান করা মোসলেম।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More