চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১০ জনের মৃত্যু : নতুন শনাক্ত ১৪৩ জন

সক্রিয় ১৮৩০ জনের মধ্যে হাসপাতালে ১৩২ জন বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৭০৭ জন : উপসর্গ নিয়ে অনিশ্চয়তার দিন গুণছেন অসংখ্য মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শনিবার ৪২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪৩ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। এদিকে গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যমতে করোনা আক্রান্ত ৬ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা ১৩৭ জন। শনিবার সুস্থ হয়েছেন ১৩২ জন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্তকৃত সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন ১ হাজার ৮শ ৩০ জন। অপরদিকে গতরাতে চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস ও উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা দুইশ ছুঁই ছুঁই হলেও সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যমতে মৃতের সংখ্যা ১৩৭ জন।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ শনিবার নতুন ৪২৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এদিন ৪৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৪৩ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৪৬ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২০ জন, দামুড়হুদা উপজেরার ২৯ জন ও জীবননগর উপজেলার ৩৮ জন। যদিও সদর উপজেলায় শনাক্তকৃত রোগীর বাস্তব সংখ্যার সাথে সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যের মিল নেই। জেলা শহরের আরামপাড়ার ৩ জন র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ হলেও সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে এ মহল্লার একজন পজিটিভ হয়েছে। গতকাল শনিবার যারা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রেডজোনে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন তারা হলেন, জেলা সদরের বোয়ালমারির মৃত বদর উদ্দীনের স্ত্রী ফুলি খাতুন (৮০), জীবননগর বাজদিয়ার ৬৫ বছর বয়সী জহুরা খাতুন। এছাড়া যারা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন যারা তাদের মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুরের মৃত ফিরোজের স্ত্রী পারভীনা, জেলা শহরের মাস্টারপাড়ার আমিন শেখের ছেলে মনোয়ার রহমান, আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ির মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মকিনা খাতুন, ডম্বলপুর গ্রামের সিদ্দিক আলীর স্ত্রী ফেরো খাতুন (৪৫), ছত্রপাড়া গ্রামের মৃত মনছের ম-লের ছেলে রইচ উদ্দিন (৬৫), সদর উপজেলার তিতুদহের মৃত বুদোর ছেলে আব্দুল খালেক, একই উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নজরুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা আনারপুরের আকবর আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী। এছাড়াও আলমডাঙ্গা ব-বিলের একজন ও আলুকদিয়া বাজারের দুজনের করোনা মহামারির মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। এদের করোনা পরীক্ষা যেমন করা হয়নি, তেমনই নেয়া হয়নি হাসপাতালে।
চুয়াডাঙ্গায় যে ১৪৩ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তার মধ্যে সদর উপজেলার আরামপাড়ার ৩ জন, কুকিয়া চাঁদপুরে ৩ জন, বিজি হাসপাতাল ২ জন, পুড়াপাড়া ২ জন, সদর হাসপাতালপাড়ায় ২ জন, মনিরামপুরে দুজন, শহরের দুজন, সরোজগঞ্জ ৩জন, জোয়ার্দ্দারপাড়ার ২জন, নেহালপুর দুজন, হাজরাহাটির দুজন। এ ছাড়াও শনিবার যেসব এলাকায় একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে কলেজপাড়া, বুজরুকগড়গড়ি, ভুলটিয়া, পীরপুর, বাগানপাড়া, যুগিরহুদা, দৌলাতদিয়াড়, নীলমণিগঞ্জ, থানা কাউন্সিলপাড়া, কুতুবপুর, সিনেমাহলপাড়া, দশমাইল, হানুরবাড়াদি, দিগড়ি, ভিমরুল্লাহ, কোর্টপাড়া, হাতিকাটা, হয়দারপুর, জ্বিনতলাপাড়া, মোমিনপুর, নূরনগর, পলাশপাড়া, ডিঙ্গেদহ ও মোবারকগঞ্জ। আলমডাঙ্গা উপজেলার গোবিন্দপুরের ৪জন, কুমারীর দুজন, হারদী দুজনসহ একজন করে রোগী যে সব এলাকায় শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে গাতি ব-বিল, আনন্দধাম, পারকুলা, রথতলা, আলমডাঙ্গা শহর, নীমতলা, ডাউকি, হাটবোয়ালিয়া, বামননগর, ডামশ, মিয়াপাড়া, ভাংবাড়িয়া, নগর বোয়ালিয়া, অনুপনগর, ওসমানপুর, জোড়গাছা, থানাপাড়া, রাধিকাগঞ্জ, ডম্বলপুর। দামুড়হুদা উপজেলার ভোগিরথপুরের ৪ জন, দামুড়হুদা সদরের ২জন, ইব্রাহিমপুরের দুজন, রঘুনাথপুরে ৩ জন ভোগিরথপুরে দুজনসহ শনিবার যেসব এলাকায় একজন করে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দশমী, দামুড়হুদা, মদনা, হোগলডাঙ্গা, দর্শনা, রুদ্রনগর, চন্ডিপুর, পোড়াপাড়া, উজিরপুর, বিষ্ণপুর, নতুন বাস্তপুর, কাদিপুর, দেউলী, গোপালপুর ও পারকুলা। জীবননগর উপজেলা সদরের ৪জন, আন্দুলবাড়িয়ার ৪জন, গোপালনগরের ৪ জন, রায়পুরের ৪ জন, স্বরূপপুর দুজন, মাধবখালী দুজন, সুবলপুর ২ জন, উথলী ৪ জনসহ একজন করে যেসব এলাকায় শনিবার কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে সন্তোষপুর, প্রতাবপুর, কাজীপাড়া, হাসপাতালপাড়া, সুবাশপুর, আশানপুর, লক্ষ্মীপুর, নিশ্চিন্তপুর, গোয়ালপাড়া, হাসাদহ, বালিহুদা। এছাড়াও কুষ্টিয়া মীরপুরের একজন, মেহেরপুরের বলিয়ারপুরের ১ জন, ঝিনাইদহের মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গার দুজন ও সলেমাপুরের একজন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্ত হয়েছেন।
শনিবার নতুন ৪২৩ জনের নমুনা নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৬ হাজার ৭শ ৫৮ জনের নমুনা নেয়া হলো। এর মধ্যে ল্যাব থেকে শনিবারের ৪৬৬ জনেরসহ মোট ১৬ হাজার ৩শ ২ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মোট করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫শ ৪৯ জন। গতকাল শনিবার ১শ ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ২ হাজার ৫শ ৮২ জন। গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে ৩৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে জেলায় সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১ হাজার ৮শ ৩০ জন। এছাড়াও ঘরে ঘরে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছেন অনেকে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More