চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভায় সংগঠনের আহবায়ক নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনা সরকার ১৬ বছরে গুম, খুন মানুষ হত্যা করেছে
স্টাফ রিপোর্টার:একটা রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছিল। আপনারা দেখেছেন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা নিজেই মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি চালানোর অর্ডার দিয়েছিলেন। এই সকল হত্যাকান্ডের জন্য ওই খুনি হাসিনা ও তার দল দায়ী।
বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে আয়োজিত পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, এই খুনি হাসিনা এখন ভারতে অবস্থানরত আছে। ভারত সরকার গণহত্যাকারী, সন্ত্রাস, ফ্যাসিস্ট সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছেন। আমরা দুঃখের সাথে বলতে চাই যে, চুয়াডাঙ্গাসহ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত ৫৪ বছর ধরে সীমান্তে মানুষ হত্যা হচ্ছে। গত ৭ দিন আগেও চুয়াডাঙ্গায় সীমান্তে একজনকে হত্যা করা হয়। ৭ দিন পর তার লাশ ফেরত দেয়া হয়েছে। বিএসএফ শুধু সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী নয়, খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে খুন করায় যেন তার একমাত্র দায়িত্ব। গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষদের গোলামির জীবনযাপন করতে হয়েছিল। তাদের মানবিক মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বারবার ক্ষুন্ন হয়েছে। পানির ন্যায্য হিস্যা দেয়া হয়নি। আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে বারবার অবদমন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ১৬ বছরে গুম, খুন মানুষকে হত্যা করেছে এই ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে। দেশের সীমান্ত, মাটি ও মানচিত্রকে রক্ষা করার দায়িত্ব বাংলাদেশের ছাত্র তরুণ যুবদের। সেই দায়িত্ব আমরা নিয়েছি এবং সেই দায়িত্বের ভিত্তিতেই জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে। ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক চাই তাহলে সমতা, ন্যায্যতা ও মর্যাদার ভিত্তিতেই সেই সম্পর্ক করতে হবে। বাংলাদেশ ভারতের উপর নির্ভরশীল নই, ভারতই বাংলাদেশের উপর সম্পূর্ণরুপে নির্ভরশীল। ভারতের অখন্ডতা, সার্বভৌমত্য বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল। এটা যেন ভারত কোনভাবেই ভুলে না যায়। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমরা বৈষম্যহীন একটা সম্প্রীতির বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা দেখছি দেশে নানারকম রাজনৈতিক কোন্দলে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে। চাঁদাবাজ, দূর্ণিতী দখলদারিত্বে পুরা বাংলাদেশ ছেয়ে গেছে।
আপনাদের এলাকার দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও দখলদারিত্ব নিয়ে কথা বলুন। যেই প্রতিবাদের জোয়ার বাংলাদেশে উঠেছে, সেই জোয়ার বন্ধ করবেন না। ছাত্র জনতা এই দেশের মানুষের পক্ষে আছে, রাজপথে আছে। যারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও দখলদারিত্বের পক্ষে তাদের বয়কট করেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের পাশে আছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়েরা চোখ হারিয়েছে, পা হারিয়েছে, শহীদ হয়েছে এই খুনি হাসিনা ও তার দলের কারণে। এই মুজিববাদী ফ্যাসিস্ট দল এ দেশে থাকতে পারে না। বাংলাদেশে এরা কোনভাবেই আসতে পারবে না। আসতে হলে আমাদের বুকের উপর দিয়ে আসতে হবে। এই ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার ও দেশ সংস্কারের পক্ষে আপনাদের দাড়াতে হবে। বিচার, সংস্কার, একটি নতুন সংবিধান এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা ফারুক আহসান, ডা. মাহমুদা আলম মিতু। পথসভায় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সদস্য সচিব আকতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ চুয়াডাঙ্গা জেলার নেতৃবৃন্দ। এর আগে জেলার আলমডাঙ্গা পথসভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য সচিব আক্তার হােসেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.