চুয়াডাঙ্গায় ৫ মেহেরপুরের ৯ ইউপিতে আজ ভোট : কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার পাঁচ এবং মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার ৯ ইউপিতে ভোটগ্রহণ আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার নির্বাচনী এলাকার সকল কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

এদিকে, ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে গাংনীতে উত্তাপ ছড়িয়েছে নির্বাচনের শুরুতেই। টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে ধলা গ্রামে সোমবার তুমুল সংঘর্ষে বয়ে যায় রক্তের বন্যা। ঝরে পড়ে তাজা দুই প্রাণ আর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে প্রায় ২০ জন। ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ২০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এ কেন্দ্রগুলোতে আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি। গাংনীতে সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে ভোটের দিন সকালে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ৪টির মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলা সদর, জুড়ানপুর, কার্পাসডাঙ্গা, কুড়ুলগাছি ও জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাঁপে নির্বাচন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে। এই ৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখা ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৩ জন। ৫টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ১৬ জন, শতাধিক সদস্য ও অর্ধ শতাধিক নারী সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহম্মেদ জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রয়েছে। ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬০টি কেন্দ্রে করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ৯জন ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচন তদারকি করবেন। এছাড়াও স্টাইকিং ফোর্স সর্বক্ষণিক নির্বাচনী এলাকায় টহল দিবে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদা উপজেলার দামুড়হুদা সদর, জুড়ানপুর, কার্পাসডাঙ্গা ও কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আজ। ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রায় সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিস। গতকাল বুধবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনের সরঞ্জাম। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ চার ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৫০৮জন। পুরুষ ৬২ হাজার ৪৯০ ও মহিলা ৬১ হাজার ১৮ জন। দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৭৫১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৫শ ৮১জন ও মহিলা ভোটার ১৬ হাজার ১শ ৭০ জন। এ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৪টি কেন্দ্রে। জুড়ানপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০হাজার ১২৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫হাজার ১শ ৫৭জন ও মহিলা ভোটার ১৪হাজার ৯শ ৬৭জন। এ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২টি কেন্দ্রে। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৬ হাজার ৯১৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮হাজার ৭শ ৪৪জন ও মহিলা ভোটার ১৮হাজার ১শ ৭২জন। এ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫টি কেন্দ্রে। কুড়–লগাছি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩হাজার ৫৯৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৯শ ৪২জন ও মহিলা ভোটার ১১হাজার ৬শ ৫৪জন। এ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৯টি কেন্দ্রে। এই চারটি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬জন, সাধারণ আসনে পুরুষ ১৭২ জন, সংরক্ষিত আসনে নারী ৫৪জন, প্রিজাইডিং অফিসার ৫০ জন, সহকারী পিজাইডিং অফিসার ৩৭৭জন, পোলিং অফিসার ৭৫৪জন। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠে কাজ করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন অনুষ্ঠান সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চারটি ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করবে ৬টি মোবাইল পার্টি ও ৩টি স্টাইকিং ফোর্স। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একজন এসআইসহ ৫ জন পুলিশ ও ১৫ জন আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত টিম দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।  অপরদিকে, কুড়ুলগাছি ইউনিয়নে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবচেয়ে বেশি নজরদারীতে থাকবে বলেও জানান তিনি। একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করবে দুটি মোবাইল পাটি ও ১টি স্টাইকিং ফোর্স। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন এসআইসহ ৫ পুলিশ ও ১৭ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন জানায় পুলিশ।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে,  জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে মাঠে থাকবে আইন-শৃংখলা বাহিনী। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য থাকবে ২২ জন করে। এছাড়া ৫টি ভোট কেন্দ্রের জন্য ১টি মোবাইল টিম, ১০ টি কেন্দ্রের জন্য ১টি স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ বিশেষ একটি টিম থাকবে। অপরদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা টহল দিবেন।

সীমান্ত ইউনিয়নে মোট ১০টি কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রগুলো হলো- গয়েশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে মোটভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮৪৬ জন। কেন্দ্রের মোট বুথ সংখ্যা ৯টি। নতুনপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬৪৯ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৮টি। উমাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ১০১ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৬টি। মেদেনীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৭৭৮ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৫টি। হরিহরনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬৭৭ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৮টি। বেণীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭৭ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ১০টি। হাবিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৯৩ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৬টি। শাখারিয়া দারুল উলুম বালক-বালিকা কওমি মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোডিং কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪৪২ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৪টি। কয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৯ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৫টি এবং যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৩২ জন। এ কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ৯টি।

সীমান্ত ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৬৬ জন ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮০ বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে। সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২জন, সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য পদে ১৮ জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়াডের্র সদস্য পদে ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে গাংনী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জোড়া খুনের গ্রাম ধলা গ্রামের পাশাপাশি অন্যান্য এলাকায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন। সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে ভোটের দিন সকালে।

গাংনী থানা সুত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় আজ বৃহস্পতিবার গাংনী উপজেলার কাথুলী, তেঁতুলবাড়ীয়া, বামন্দী, মটমুড়া ও সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ। ভোটের নিরাত্তায় প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ সদস্য ৫ জন, আনছার ভিডিপি সদস্য ১৭ জন করে মোতায়েন করা হয়েছে। অপরদিকে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে পুলিশের পাশাপাশি স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছে র‌্যাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের দু’টি টিম এবং বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) দু’টি টিম। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সরঞ্জাম ও লোকবল পাঠোনো হয়েছে। শুধুমাত্র ব্যালট পেপার পাঠানো হবে ভোটে গ্রহণ শুরুর আগ মুর্হূতে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ দফায় মুজিবনগর উপজেলায় ৪টি ও গাংনী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ভোট। সদর উপজেলায় এ দফায় নির্বাচন হচ্ছে না। তাই গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার জন্য দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বিবিজি সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৪টি টিম কাজ করছে গাংনী উপজেলার ৫টি ইউপিতে। পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের সমন্বয়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ।

এদিকে ধলা গ্রামের খুনের ঘটনায় গ্রামের মানুষের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। ভোটের দিন আর কোনো সহিংসতা যাতে না সেদিকে লক্ষ্য রেখে রামকৃষ্ণপুর ধলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন অফিস। এছাড়াও সংঘর্ষের পর থেকেই ধলা সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে।

এদিকে, ভোটের মাঠে উত্তাপ রয়েছে এবারের নির্বাচনের শুরুতেই। টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে ধলা গ্রামে সোমবার তুমুল সংঘর্ষে বয়ে যায় রক্তের বন্যা। ঝরে পড়ে তাজা দুই প্রাণ আর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে প্রায় ২০ জন। ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ২০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এ কেন্দ্রগুলোতে আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনে ভোট চাওয়া কেন্দ্র করে সোমবার সকালে কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা গ্রামে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বর্তমান মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুল ও উপজেলা কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান মেম্বর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে টুটুলের আপন মামাতো দুই ভাই নিহত হয়। হত্যাকা-ের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। আতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামি করে তার পক্ষের ৬৬ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেছেন নিহতদ্বয়ের ভাই। ঘটনার পর থেকেই আতিয়ার পক্ষের লোকজন বেশিরভাগ আত্মগোপন করেছে। মামলার আসামি তাই অনেকে ভোট দিতে পারবে না। সংঘর্ষে পরিবারের দু’জনকে হারালেও ভোটের মাঠের পরিবেশ এখন টুটুলের অনুকুলে।

মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আজ বৃহস্পতিবার মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হেয়েছে। উপজেলার মোট ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের ৪জন চেয়ারম্যানের বিপরীতে ১৬ জন, ১২ জন সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্যের বিপরীতে ৪৩ জন এবং ৩৬ জন সাধারণ সদস্যের বিপরীতে ১৪২ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ তাদের ভাগ্য নির্ধারণের সময়।

মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়নের ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত রফিকুল ইসলাম গাইন, বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম মোল্লা এবং মাহবুবুর রহমান ডাবলু। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ৮জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন লড়ছেন। দারিয়াপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী লড়ছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুস্তাকিম হক খোকন, বর্তমান চেয়ারম্যান তৌফিকুল বারী বকুল, মাহবুবুল আলম রবি, মোয়াজ্জেম হোসেন নাবুল, মনজুরুল হক ও আবুল কাশেম। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১৪ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। মহাজনপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী লড়ছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউর রহমান নান্নু, বর্তমান চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, মিসকিন আলী ও তোফাজ্জল হোসেন চঞ্চল। মহাজনপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধ করছেন। এছাড়া বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কুতুবউদ্দিন, বর্তমান চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন চেয়ারম্যান হওয়ার যুদ্ধে রয়েছেন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১১ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মুজিবনগর উপজেলার মোট ৪টি ইউনিয়নের ৪০টি কেন্দ্রের ২৪০টি বুথে ভোট গ্রহণ চলবে। এছাড়া ৪টি ইউনিয়নে মোট ৮০ হাজার ৪৫৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৩৯ হাজার ৯১৫ জন পুরুষ ও  ৪০ হাজার ৫৪০ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।

সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ভোট বক্স এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More