ঝিনাইদহে আয়রণ ট্যাবলেট সেবনের পর স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রেবা খাতুন (১২) নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং মেয়েটির বাবার দাবি, স্কুলে আইরন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট (আয়রন ট্যাবলেট) খাওয়ানোর পর মৃত্যু হয়েছে রেবার। ওই সময় একই স্কুলের ফারজানা ও আসমা নামের আরো দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। রেবা উপজেলার উত্তর সমশপুর গ্রামের সাগর হোসেনের মেয়ে। চিকিৎসকরা জানান, সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে আনার পর তার মৃত্যু হয়।

হাট গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফ আলি সাংবাদিকদের জানান, রেবা অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্কুলে আসে। এর কিছুক্ষণ পর দুইদিন আগে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা আইরন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট অন্যদের সাথে তাকেও খাওয়ানো হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে রেবা খাতুনসহ ৩টি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রেবা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

রেবার বাবা সাগর হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে সকালে বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে স্কুলে গেছে। তার কোনো রোগ ছিলো না। কেন আমার মেয়ে মারা গেল? তা তদন্ত করার দাবি করছি আমি।’

হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে ৩ জন মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ১ জন মারা গেছে। আমাদের দাবি, এই মৃত্যুর সঠিক কারণ যেনো স্বাস্থ্য বিভাগ দ্রুত বের করে।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশরাফুজ্জামান বলেন, মেয়েটিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তবে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ ছিলো; তা আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।

আয়রণ ট্যাবলেট খেয়ে মৃত্যুর কোনো নজির নেই জানিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, ‘এই ওষুধ যদি মেয়াদোত্তীর্ণও হয়, সেক্ষত্রে সর্বোচ্চ পাতলা পায়খানা হতে পারে।’ ‘তারপরও এই মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’

ঝিনাইদহ কোতোয়ালী থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More