দর্শনার জয়নগর ইমিগ্রেশন ভবনে পুলিশ কনস্টেবল শামীমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পরিবারের অভিযোগ হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার : আত্মহত্যা না হত্যা খতিয়ে দেখছে পুলিশ
দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের নতুন ইমিগ্রেশন ভবনে একটি কক্ষ থেকে পুলিশ কনস্টেবল শামীম রেজা সাজুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সিলিং ফ্যানের সাথে গলাই দড়ি বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আত্মহত্যা না কি হত্যা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়না তদন্তের পর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে জানাজা শেষে সাজুর লাশ পুলিশি ব্যবস্থায় পৌঁছানো হয় গ্রামের বাড়িতে। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের ঝটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাসেম আলীর ৪ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে শামীম রেজা সাজু ২০১৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। মাস ছয়েক আগে শামীম যোগদান করেন দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশনে। যোগদানের পর থেকেই তিনি নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের একটি ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করতেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টার দিকেও যখন শামীম ইমিগ্রেশন অফিসে না আসেন, তখনই সহকর্মীরা তাকে ডাকতে যান কক্ষে। বহু ডাকাডাকির পর কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সিলিং ফ্যানের সাথে গলাই দড়ি দেয়া ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা (দামুড়হুদা-জীবননগর সার্কেল) এএসপি জাকিয়া সুলতানা ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদ তিতুমীর। বেলা ১১টার দিকে সাজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেয় ময়না তদন্তের জন্য। ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশি ব্যবস্থাপনায় অ্যাম্বুল্যান্সে লাশ নেয়া হয় এক সন্তানের জনক সাজুর গ্রামের বাড়িতে। এ সময় বাবা-মা, স্ত্রীসহ স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাশ ভারি হয়ে উঠে। বাদ এশা গ্রামের ঈদগা মাঠে ২য় জানাজার নামাজ শেষে বেদনা বিধুর পরিবেশে দাফন সম্পন্ন করা হয় সাজুর লাশ। পুলিশ কনস্টেবল শামীমের বড়ভাই সাজাহান আলী, সেজো ভাই এখলাসুর রহমান, শ্বশুর আজিজুল ইসলাম, চাচা মেহেদী মাসুদ, বাবুল আক্তার, শাহবুল ইসলাম, আজিজুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই মুসা কামাল অভিন্ন ভাষায় অভিযোগ তোলেন আত্মহত্যা নয় পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। মাসুদ মেহেদী জানান, এ ঘটনায় শামীমের বাবা হাসেম আলী বাদী হয়ে আজকালের মধ্যে মামলা দায়ের করা হতে পারে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছেন পুলিশ সুপারের কাছে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এএসপি জাকিয়া সুলতানা বলেন, প্রাথমিক ধারণা আত্মহত্যা। তবুও পরিবারের পক্ষে অভিযোগ থাকলে ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমেই খতিয়ে দেখা হবে। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদ তিতুমীরকে একাধিকবার ফোন করার এক পর্যায়ে রিসিভ করে জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী প্রশ্নের আগেই তিনি ফোন কেটে দেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.