নিজের নয়, জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছি: ড. ইউনূস

নিজের ইচ্ছায় নয়, দেশের জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফরকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা জানান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটা (সরকারপ্রধানের পদে বসা) আমার নয়, এটা সেসব মানুষের চাওয়া, যারা পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তারা যেভাবে চলতে চান, আমি শুধু তাদের সেভাবে চলতে সহায়তা করছি। দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন অসুবিধার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে অসুবিধা অনেক। অনেকেই এটাকে ব্যাহত করতে চায়। বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত রাজনৈতিক উপাদানগুলো পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

গত দেড় দশকে প্রাপ্তবয়স্ক যারা ভোটার হয়েছেন তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, কেউ ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। কেউ ১৫ বছর ধরেও। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একবার ভাবুন, আপনার ১৮ বছর বয়স হয়েছে, আপনি ভোট দিতে আগ্রহী। কিন্তু আপনি সেই সুযোগ কখনো পাননি। কারণ, সত্যিকার অর্থে কখনো নির্বাচনই হয়নি। এখন তারা ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার ভোট দিতে পারবেন।

এদিকে দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে আসিয়ান সভাপতি হিসেবে দেশটির ভ‚মিকা কাজে লাগানোর কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও আসিয়ানে নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে দেশটিকে অনন্য অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তার কথায়, আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া পুরো আলোচনায় (রোহিঙ্গা ইস্যুতে) তার প্রভাব কাজে লাগাবে, যাতে আমরা এই সমস্যা সমাধান করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ১৮ মাসে নতুন করে দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারা এরই মধ্যে দেশে থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে সমস্যা ক্রমেই আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের (রোহিঙ্গা শরণার্থী) দেখভালের সব তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে।

ড. ইউনূস আরও জানান, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আগামী কয়েক মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে। প্রথমটি হবে চলতি মাসের শেষের দিকে কক্সবাজারে। উচ্চস্তরের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এবং তৃতীয় সম্মেলনটি হবে বছরের শেষদিকে কাতারের দোহায়।

এ প্রসঙ্গে বারনামা লিখেছে, ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা খুব একটা অগ্রগতি লাভ করেনি। দীর্ঘায়িত এই মানবিক সংকট কেবল বাংলাদেশকেই নয়, বরং মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রকেও প্রভাবিত করছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More