পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

স্টাফ রিপোর্টার: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ। মানবজাতির শিরোমণি মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিন। করোনা মহামারীর কারণে এবার সারা দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দিনটি উদযাপিত হবে।
৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল ইসলামের শেষ নবী (সা.) আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের এ দিনে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়।
একটা সময় আরবজাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিলো। মানুষ হয়ে পড়েছিলো বেদিন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিলো অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিলো মানুষ। মূর্তিপূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’ এ কারণে এবং তৎকালীন আরবজাহানের বাস্তবতায় এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহনবী মুহাম্মদ (সা.) এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। পবিত্র কুরআনে তাঁর জীবনকে বলা হয়েছে ‘উসওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ সুন্দরতম আদর্শ।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। করোনা মহামারীসহ আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয় নবী (সা.)-এর অনুপম শিক্ষার অনুসরণ ও ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বে শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। এছাড়াও বাণী দিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দিনটি উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সশস্ত্রবাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তাইয়িবা’ আঁকা ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কদ্বীপ ও লাইট পোস্টে টাঙানো হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় আলোকসজ্জা করা হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) আজ জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোয় আলোচনা সভা ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আজ উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোয় যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা হবে।
দিনটি উদযাপনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আঞ্জুমান রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ঢাকার উদ্যোগে মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়বিয়া আলিয়া মাদরাসার সহযোগিতায় মঙ্গলবার র‌্যালি বের করে। এছাড়া জাকের পার্টি বৃহস্পতিবার থেকে দেশজুড়ে ২ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে। আজ বাদ জুম্মা দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা পর্যায়ে থানা ও উপজেলাভিত্তিক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করবে তারা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি: ইসলামিক ফাউন্ডেশন সারা দেশে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম সচিব ড. মো নূরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, আগে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ১৫ দিনব্যাপী বাদ মাগরিব ও বাদ এশা দেশবরেণ্য আলেম-ওলামাদের ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হতো। বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তা লাইভে জুম অ্যাপসহ ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া প্রতিদিন বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সম্মেলন কক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ওই ওয়াজ মাহফিল প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More