পুলিশের করা মামলায় চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ১৭ নেতা জেলহাজতে

প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের করা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৭ নেতাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ জিয়া হায়দারের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন বিএনপির নেতারা। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে, দলীয় নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠানোয় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এমএম শাহজাহান বলেন, আসামিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছিলেন। ওই জামিনের সময় ছয় সপ্তাহের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হওয়ার হাইকোর্টের নির্দেশনা ছিলো। এ জন্য তারা আজ (গতকাল মঙ্গলবার) জেলা ও দায়রা জজ জিয়া হায়দারের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠান। বিষয়টি নিয়ে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. বেলাল হোসেন বলেন, মামলা পর্যালোচনায় ১৭ জনই এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় আদালত নথি পর্যালোচনা করে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

জেলহাজতে পাঠানো বিএনপির ১৭ নেতা হলেন দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকারম হোসেন, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বিশ্বাস, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী, নতিপোতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, নাটুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি, জুড়ানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস আলী, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন এবং নতিপোতা ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মো. সুমন ও মো. রফিক।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের ফুটবল মাঠ থেকে বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকে আটক এবং তাদের কাছ থেকে সাতটি বোমাসদৃশ বস্তু ও ১৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক সোয়াদ বিন মোবারক বাদি হয়ে পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি দামুড়হুদা মডেল থানায় আটক পাঁচজন ছাড়াও উপজেলা বিএনপির আরও ১৭ জনের নামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। ওই পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিলো। পরে উচ্চ আদালত থেকে স্থায়ী জামিন পান তারা।

এদিকে, নেতৃবৃন্দের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে প্রেরণ করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ। পৃথকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক জায়েদ মো. রাজিব খাঁন। এছাড়াও প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন, জেলা কৃষদলের সদস্য সচিব তোবারক হোসেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফ হোসেন জোয়ার্দ্দার সোনা ও তরিকুল ইসলাম বিলু, দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এসএম মাহবুবুর রহমান বাচ্চু, সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান লিপ্টন ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন। প্রতিবাদ বিবৃতিতে তারা বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছে অথচ একদিকে পুলিশ মিথ্যা গায়েবি মামলা দায়ের করছে অন্যদিকে আদালত সুবিচার নিশ্চিত করতে পারছে না। দেশের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মঙ্গলবার ১৭জন নেতাকর্মীর জামিন বাতিলের ঘটনা অপশাসনের নামান্তর। প্রশাসন দলীয়ভাবে ব্যবহার হয়ে ইতোমধ্যেই বিতর্কিত হয়ে পড়েছে, বিচার বিভাগও সেই পথেই হাঁটছে। বিচার বিভাগের প্রতি আবেদন থাকবে সাধারণ মানুষের যে ন্যুনতম আস্থা টিকে আছে সেটুকুও যেনো বিসর্জন না দেয়া হয়। আদালতের আজকের এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেনো না ঘটে নিশ্চয় সংশ্লিষ্ট মহল সে বিষয়ে সচেতন থাকবেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More