প্রয়োজনীয় সংস্কার ; গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন : চরমোনাই পীর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মেঘ বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে শহরের পায়রা চত্তরে এ গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় গণসমাবেশের মঞ্চে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ ৭১ এ স্বাধীন করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবনকে হারিয়েছিল, পঙ্গুত্ব বরণ করেছিল, যে আশা লক্ষ উদ্যেশ্য নিয়ে। সেটি ছিল মূলত তিনটা সেøাগানের মাধ্যমে সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবিক মর্যাদা। কিন্তু ৭১ পরবর্তী যারা দেশ পরিচালনা করেছে তাদের থেকে আমরা চোরের দিক থেকে তামাম দুনিয়ায় পাঁচ বার প্রথম হয়েছি। তিনি বলেন, ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিবাদে যখন আমাদের ভবিষ্যৎ সন্তানগুলো বৈষম্যবিরোধী আওয়াজ তুলেছে তখন আমরা দেখেছি তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় পাখিরমত গুলি করে রাস্তায় লুটিয়ে ফেলা হলো। আপনারা দেখেছেন মা চিৎকার করে কাঁদছে আর বার বার বলছেন আজকে কয়দিন পর্যন্ত আমার সন্তান আমাকে মা মা বলে ডাকছে না। সেই শব্দ এখনো আমাদের কানে ভাঁসছে।
তিনি আরও বলেন, যারা এর আগে রাষ্ট্রপরিচালনা করেছে, তারা পরিক্ষিত। তারা আবার মসনদে বসে নতুনভাবে কি সুন্দর দেশ উপহার দেবে তা আমাদের বুঝতে আর বাকি নেই। নিজেরা চাঁদার ভাগ বণ্টন নিয়ে নিজেরা নিজেদেরকে খুন করেছে। পাথর দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আজ ইসলামী দলগুলো সব এক কাতারে এসেছে। দেশ প্রেমিক অনেকেই আছে। তিনি ঝিণাইদহ ৩ আসনে মাওলানা সরোয়ার হোসেন ও ঝিনাইদহ ৪ আসনে মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল জলিলকে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঝিনাইদহ জেলা শাখা এই গণসমাবশের আয়োজন করে।
পীর সাহেব চরমোনাই বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে এবং টাকা পাচারকারী ও খুনিদের, গুমিদের, জালিমদের, বদমায়েশদের, গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি ও ঝিনাইদহ ২ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা.এইচ এম মোমতাজুল করীম। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, নায়েবে আমির অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আওয়াল, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্য সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোইব হোসেন, খুলনা বিভাঘীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুফতি আহমাদ আব্দুল জলিল।
সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন মাস্টার শরিফুল ইসলাম। এছাড়া স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তৃতা করেন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মুফতি মোহাম্মদ রাসেল উদ্দিন, মুফতি মোহাম্মাদ আলী হুসাইন, মাওলানা হাসানুর রহমান এজাজী, মাওলানা কামাল উদ্দিন আল মাহমুদ, প্রভাষক আশরাফ আলী ফারুকী, মাওলানা এনামুল হক ফয়েজি, মুফতি মনিরুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন খান, আলহাজ্ব রায়হান উদ্দিন, আবু বকর সিদ্দিকী, মাও. নিজাম উদ্দিন মুন্সি, সাইফুর রহমান বাদল, মাওলানা গাজি ইয়াসিন আলী, ফারুক হোসেন, মুফতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, এইচএম নাঈম মাহমুদ, ইসমাইল হোসেন রাহাত প্রমুখ।
সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর, জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানসহ অনেকেই বক্তৃতা করেন।
গণসমাবেশের শুরুতেই বৃষ্টি শরু হয়। প্রচ- বৃষ্টি উপেক্ষা করে বৃষ্টিতে ভিজে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগদেন। আসরের নামাজের পর পীর সাহেব চরমনোই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম গণসমাবেশে উপস্থিত হন। তখনও প্রচন্ড বৃষ্টি। এক পর্যায়ে বৃষ্টিতে ভিজেই দলীয় নেতা-কর্মীরা সমাবেশ শেষ পর্যন্ত ছিলেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More