বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিকের মৃত্যু : বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো কিশোরের

আলডাঙ্গায় শাটারিঙয়ের বাঁশকাঠ খোলার জন্য সেপটিক ট্যাংকের ভেতর প্রবেশ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় সেফটিক ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নির্মাণাধীন ট্যাংকে নেমে অচেতন হয়ে পড়া শ্রমিককে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরের। বাঁচানো যায়নি সেই শ্রমিককেও। মাটির নিচে বদ্ধ সেফটিক ট্যাংকে অক্সিজেনের অভাবে তাদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গত শুক্রবার সকালে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের আনন্দধাম দাসপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গার আনন্দধামের দাসপাড়ার নৃপেন দাসের নির্মাণাধীন বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে কাজ করছিলেন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের আনছার আলী প্রামাণিকের ছেলে রাজমিস্ত্রি শরিফুল ইসলাম (৩৫)। তার সাথে সহযোগিতা করছিলেন পাবনা জেলার চাটমোহরের রাজকুমারের কিশোর ছেলে সাগর (১৫)। সাগর সম্পর্কে নৃপেন দাসের নাতিছেলে।

শুক্রবার সকালে শরিফুল ইসলাম শাটারিঙয়ের বাঁশকাঠ খোলার জন্য সেপটিক ট্যাংকের ভেতর প্রবেশ করেন। বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হলেও তিনি ট্যাংক থেকে বের না হওয়ায় ডাকাডাকি শুরু করে সাগর। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে সাগরও ট্যাংকের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর দুজনেই ট্যাংকের মধ্যে আটকে যায়। তারা বের হয়ে না আসলে বাড়িমালিক ডাকাডাকি শুরু করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে খবর দেয়া হয় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অচেতন অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে। এরপর তাদের হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, সাগর দাস বাড়িমালিক নৃপেনের আত্মীয়। সেই সুবাদে আলমডাঙ্গায় থেকে মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ শিখছিলো। বেশ কিছুদিন ধরে নৃপেনের বাড়ি নির্মাণের কাজ করতে আসে শরিফুল। এরই মধ্যে শরিফুল ও সাগর দাসের মধ্যে সুসম্পর্ক হয়ে যায়। যার কারণে শরিফুল সেপটিক ট্যাংকে নেমে সাড়া না দেয়ার কারণে সাগর দাস তাকে তুলতে যান। ফলে সাগরেরও মৃত্যু হয়।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, আনন্দধাম দাসপাড়ার এক নির্মাণাধীন বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের কাজ করতে নেমে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার ফলে ট্যাংক থেকে বের হতে না পেরে মারা গেছে। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় দুটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার দিনই দুজনের লাশ তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More