বড়দিন ঘনিয়ে আসায় বর্ণিল সাজে সেজেছে খ্রিস্টানপল্লী 

জমকালো আয়োজনে চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গায় সাজ সাজ রব

হাসমত আলী: দরজায় কড়া নাড়ছে বড়দিন। এ দিনটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জীবনে বয়ে আনে এক অনাবিল ভালোবাসা ও সোহার্দ্য খ্রির্তৃত্বপূর্ণ । যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে বয়ে আনে আনন্দের বন্যা।  বড়দিনের বড়সড় আনন্দ। আর মাত্র দুইদিন পর বড়দিন। খ্রিষ্টান পল্লির রাস্তাঘাট, ধর্মীয় উপাসনালয় এবং বিশেষ স্থানগুলো ইতোমধ্যে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। উৎসব আমেজে মেতেছেন এখানকার মানুষ। ইতিমধ্যেই পাক বড়দিন শুরু হয়ে গিয়েছে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গায় ৪টি গির্জা এবং খ্রিস্টান বাড়িগুলোতে সাজ সাজ রব। বাড়িগুলোর সামনে সাজানো হচ্ছে ক্রিসমাসট্রি। মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ও পোস্ট কার্ডের মাধ্যমে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। অতিথি আপ্যায়নের জন্য বাড়িতে বাড়িতে তৈরি করা হবে রকমারি পিঠা। গির্জা ও উপধর্মপল্লিগুলোকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোকসজ্জায়। গির্জার ভেতরে দৃষ্টিনন্দন ডিসপ্লে করা হয়েছে। প্রাঙ্গণে কুঁড়েঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে রাখা হবে মাতা মেরির কোলে যিশুখ্রিষ্টের মূর্তি। বড়দিন উপলক্ষে কার্পাসডাঙ্গার বাজারের তৈরি পোশাক বিপণিবিতানগুলোতে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। বিক্রিও ভালো। কার্পাসডাঙ্গা বাজারের আলী ও  বিডি ফ্যাশান এবং ফ্যাাশান হাউজ এর মালিক আলী ও  দলু দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, রুচিশীল রকমারি পোশাকের সমাহারে দোকান সাজানো হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেশি। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের  গৃহবধূ কিরণ গোমেজ বলেন, ‘বড়দিন উপলক্ষে অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য আমরা সপ্তাহ খানেক ধরে বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি ও কেক তৈরি করবো। আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন দেশের বাইরে ও ঢাকায় বসবাস করে। বড়দিন উপলক্ষে তারা প্রতিবছর গ্রামে আসে। সবাই মিলে উৎসব উদ্যাপন করি। তাদের জন্য হরেক রকমের খাবার রান্না করা হবে।

বড়দিন আগামী রোববার থেকে উৎসব শুরু হবে। গির্জা এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কার্পাসডাঙ্গার পবিত্র যীশু হৃদয় ক্যাথলিক গির্জার ফাদার লাভলু সরকার বলেন, নবরাজ খ্রিস্টকে গ্রহণ করতে বড়দিনের নয় দিন আগে থেকে নভেনা খ্রিস্ট যাগ বা পাপস্বীকার পর্ব চলছে। আমাদের স্টুল অনুষ্ঠান ২৪ ডিসেম্বর রাত ৯টায় উপসনা আরম্ভ হবে। ২টি গ্রামের প্রায় ৫শত পরিবার উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে। বড়দিনের কীর্তনের (ক্যারল) মধ্যদিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।

এদিকে ক্রাইস্ট চার্চ বাংলাদেশ এর কার্পাসডাঙ্গার রেভার বা পুরোহিত রেভা উজ্জল বিশ্বাস বলেন, আমাদের মূল অনুষ্ঠান ২৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত উপসনা চলবে।

দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গায় মোট ৪টি আলাদা আলাদা গির্জা আছে। এদের মধ্যে ক্যাথলিক, চার্চ অব বাংলাদেশ ও প্রেস ভিত্যারিয়ান এবং বৈৎলেহম এজি চার্চ বাংলাদেশ এই চারটি গির্জায় আলাদা আলাদা প্রার্থনা বা উপসনা পালন করা হবে বলে জানান বিভিন্ন চার্চের ফাদার, পুরোহিত, পালক গন।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ইতিমধ্যেই কয়েকবার গিয়েছি খ্রিস্টানপল্লীতে। গির্জা ও আশপাশের এলাকায় সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More