প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে কলেজছাত্রের আত্মহত্যা

মোবাইলফোনে খবর পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করলো পরিবারের সদস্যরা

স্টাফ রিপোর্টার: প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন অভিমানী এক প্রেমিক। তার নাম ফজলে রাব্বি সোলাইমান। গত মঙ্গলবার রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের চক্ষু হাসপাতালপাড়ায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। গতকাল বুধবার জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে এবং চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পাশাপাশি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র সনো সেন্টারে এক্স-রে বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফজলে রাব্বি ছিলেন সবার ছোট। বাবা টুলু মিয়ার চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাকরির সুবাদে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার চক্ষু হাসপাতালের পেছনে ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সেই বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন ফজলে রাব্বি।

পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত একটি নারী আমাদের ফোন করে ফজলে রাব্বির গলায় ফাঁস দিয়েছেন বলে তার ঘরে যেতে বলে। আমরা গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। পরে জানতে পারি প্রেমিকার সাথে মনমালিন্যের কারণে ভিডিওকলেই আত্মহত্যা করেন ফজলে রাব্বি।

পরিবারের কাছে ফোন দেয়া নম্বরে কথা হয় দৈনিক মাথাভাঙ্গার এই প্রতিবেদকের সাথে। অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয় এই নম্বরটি চুয়াডাঙ্গার শুভ নামে এক তরুণীর। তিনি শুভ’র ঢাকায় একটি ছাত্রী মেসে থাকে। এই ছাত্রী মেসের থাকা শুভ’র সিনিয়র আপু। শুভ ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। শুভ ফজলে রাব্বির প্রেমিকা। রাতে তারা ভিডিওকলে কথা বলছিলো। হঠাৎ তাদের মাঝে মনমালিন্য হলে ভিডিওকলে রেখেই ফজলে বাব্বি তার ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দেয়। পরে শুভ’র এক বান্ধবীর মাধ্যমে ফজলে রাব্বির পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে খবর দেয়া হয়।

এদিকে, অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে সদর থানা পুলিশ। পরে মরদেহ গ্রামের বাড়ি বোয়ালমারী নতুন মসজিদপাড়ায় পৌঁছুলে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জানাজার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয় বলে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, রাত ২টার দিকে ফজলে রাব্বি নামে এক যুবকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। তার গলায় ফাঁসের আলামত পাওয়া গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ভিডিওকলে কথা বলার সময় যুবক রাব্বি গলায় ফাঁস দিয়েছে। অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More