মধুমাসে ভ্যাপসা গরম : বিষিয়ে উঠেছে জনজীবন

স্টাফ রিপোর্টার: মধু মাস জ্যৈষ্ঠের আজ ২৩ দিন। আম কাঠাল পাকার প্রাকৃতিক ভ্যাপসা গরমে জনজীবন যেনো হাপিয়ে উঠেছে। দেদারছে ঘাম ঝরছে। বাতাসে যেনো আগুনের হলকা। রাজধানী ঢাকায় শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও পশ্চিম উত্তরবঙ্গে গতকাল তার প্রভাব ছিলো না। শুক্রবার দিনগত রাতে চুয়াডাঙ্গায় সামান্য বৃষ্টি হলেও শনিবার সকাল থেকেই তীব্র গরমে হাপিয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগার পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ –পশ্চিম মৌসুমী বায়ু মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়াগত পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকূলে রয়েছে। ফলে দেশে বর্ষা ঢুকতে পারে দু একদিনে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিচু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর ও নীলফমারী অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা রোববার সামান্য হ্রাস পেতে পারে। ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে। ৫ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টি বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঈশ^রদীতে ৩৭ দশমিক ৬ ও সর্বনি¤œ শ্রীমঙ্গলে ২৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত সিলেটে ১২৪ মিলিমিটার ও ঢাকায় ১১১ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৪ ও সর্বনি¤œ ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তাপ মাপা যন্ত্রের পারদ খুব একটা উপরে না উঠলেও ভ্যাপসা গরমে সাধারন মানুষের জীবন যেনো বিষিয়ে উঠছে। অস্বস্তির মাত্রা সর্বোচ্চ মাত্রায়। অতিরিক্ত গরমে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। এদিকে কিছু এলাকা ঘুরে আনোয়ার হোসেনের ক্যামেরায় উঠে এসেছে বেশ কিছু চিত্র। শনিবার চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জ এলাকায় কিছু শ্রমিকের হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম দেখে বোঝা যাচ্ছিলো গরমে মানুষ কেমন নীল হয়ে যায়। দিনমজুরি মুক্তার আলী, আব্দুল ছালাদ, ও হারুন আলী বলেন এই গরমে ফ্যানের নিচে বসে থাকা যাচ্ছে না, অথচ জীবিকা অর্জনের জন্য আমাদের মতো বসে থাকলে চলে না। কাজে বের হতেই হয়। এই গরমে খোলা আকাশের নিচে, মাথাই একবোঝা ইট আর কড়াই ভর্তি বালুসিমেন্ট নিয়ে পরিশ্রম করতে হয় রাজমিস্ত্রির জোগালেদের। জোগালে মুক্তার আলী আরও বলেন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজ করে একজন রাজ মিস্ত্রীর ৫শ আর জোগালে ৪শ টাকা হাজরে পাই এই ভাবেই জীবন চলেযাচ্ছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু পাড়া মহল্লার নারী পুরুষ হাঁত পাখা নিয়ে গরমে ঘর ছেড়ে বাড়ির আশেপাশে বাগানে বসে শীতলতার স্বস্তি নিতে দেখা গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে চোখে পড়ছে ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান। পথচারিরা গরমে একটু গলা ভেজাতে ভীড় করছেন ওখানে। এ ধরনের নোংড়া পরিবেশের অস্থিকর খাবার কেনো খাচ্ছে জানতে চাইলে এক ব্যক্তি বলেন কি করবো একটা ডাবের দাম ৬ ০থেকে ৭০ টাকা, এক হালি তাল শাষ ২০ টাকা, এতো গরম পড়ছে গলাটা একটু ভেজাতে এক গ্লাস শরবত ১০ টাকাদিয়ে কিনে খাচ্ছি। ১০ টাকায় প্রাণ বাঁচলে দোষের কী!
অপরদিকে ঢাকায় বৃষ্টির মাঝে বজ্রপাতের সময় ৩ জনের প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More