মেহেরপুরে করোনায় ৫ জনসহ ১৩ জনের মৃত্যু : শনাক্ত ৫৩

জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫০ জনে : মারা গেছে ৯৪ জন
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৫৩ জন। এর মধ্যে গাংনী উপজেলাতেই ৪৫ জন। সদরের কেউ পজিটিভ না হলেও মুজিবনগর উপজেলায় ৮ জন। এদিকে শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেডজোনে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শনিবার ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন সদর উপজেলার তেরঘরিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান (৬৭), ঝাউবাড়ীয়া গ্রামের ফাতেমা খাতুন (৬৫), কাঠালপোতা গ্রামের সেলিম রেজা (৫০), শহরেরর কোর্টপাড়ার কাঞ্চন (৬৫) ও দিঘিরপাড়া গ্রামের হালিমা খাতুন (৫০)। এছাড়াও করোনা উপসর্গ নিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের চারচারর আব্দুল কুদ্দুস (৬৫) ও গাংনী গোরস্থান পাড়ার আম্বিয়া খাতুন (৫৫)। আম্বিয়া খাতুন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন আর আব্দুল কুদ্দুসের হার্টের অসুখ ছিলো। এদিকে মুজিবনগর উপজেলায় আজও ৬ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এরা হলেন দারিয়াপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খোকা (৫৫), রামনগর গ্রামের আয়শা খাতুন (৯০) ও বিশ্বনাথপুর গ্রামের আশাফন (৬৫), একই গ্রামের আশার স্ত্রী ফিরোজা (৫৩), মানিকনগর গ্রামের হিসাব ম-লের স্ত্রী সবেদা (৫৫) ও মহজনপুর ইউনিয়নের গোপালপুর ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাজুল ইসলাম (৬০)। বেশ কয়েকদিন ধরে তারা সর্দি, জ¦রসহ নানা অসুখে ভুগছিলেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫০ জনে। এদিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১৫০ বেডের বিপরীতে রেডজোনে ৫৬ জন (দুটি আইসিইউসহ) ও ইয়োলো জোনে রোগী ভর্তি আছে ৬৫ জন। জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৬২৩ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন মোট ৭৫০ জন করোনা রোগীর মধ্যে সদর উপজেলার বাসিন্দা ২১৩ জন, গাংনী উপজেলার বাসিন্দা ৪৩৬ জন ও মুজিবনগর উপজেলার বাসিন্দা ১০১ জন। এছাড়া ট্রান্সফার্ড হয়েছেন ১১৯ জন। এদের মধ্যে সদর উপজেলার ৭৬ জন, গাংনী উপজেলার ১৮ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ২৫ জন রয়েছেন। এ ছাড়া এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৬২৩ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৯৩০ জন, গাংনী উপজেলায ৪৭৮ জন ও মুজিবনগর উপজেলায় ২১৫ জন রয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ৯৪ জন। এদিকে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় উদ্বেগজনক হারে সংক্রমন বৃদ্ধিতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবার মাঠে নামলেন মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম। শনিবার দুপুরের দিকে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম পুলিশ ও ডিবি সদস্যদের নিয়ে মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালান। এসময় ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম বলেন, নিজেকে বাঁচাতে হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে হলে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করতে হবে। জনসচেতনতা মূলক প্রচারণায় অন্যান্যদের মধ্যে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহা দারা খান, ডিবির ওসি জুলফিকার আলী, ওসি অপারেশন রাসুল সামদানী, ট্রাফিক ইনস্পেক্টর বুলবুল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের ১০ম দিনেও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক অভিযান চালায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যশোর সেনানিবাস ২৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির ক্যাপ্টেন এম এম রওশনের নেতৃত্বে শহরের কোর্ট এলাকা থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে ব্যাপক সচেতনতামূলক অভিযান চালায়। এসময় অযথা যারা বাইরে ঘোরাফেরা করছিলেন তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়। একই সাথে অযথা ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More