মেহেরপুরে গোপন বৈঠকে ডিবি পুলিশের অভিযান : নারী কাউন্সিলরসহ ১৮ শিবির কর্মী আটক

মেহেররপুর অফিস: মেহেরপুরে নাশকতার পরিকল্পনা চলাকালীন সময়ে পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর শিউলি খাতুনসহ ১৮ শিবির কর্মীকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের ওসি জুলফিকার আলীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মেহেরপুর শহরের শেখপাড়ার সবুজ হোসেনের বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় সাতটি বাইসাইকেল, তিনটি মোটরসাইকেল, বিভিন্ন ধরনের জিহাদি বই, ক্যালেন্ডার, টাকা তোলার রশিদ জব্দ করা হয়। মহিলা কাউন্সিলর শিউলি খাতুন দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়িতে ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বিভিন্ন সময় তার বাড়িতে শিবির সদস্যদের নিয়ে মিটিং হতো এলাকাবাসী জানায়। আটককৃত ছাত্রশিবির কর্মীরা হলেন মেহেরপুর ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুর ওহাব ম-লের ছেলে মেহেদী হাসান (২২), সানোয়ার হোসেনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২২), শহরের গড়পাড়ার মাহাবুবুল হাসানের ছেলে সৈয়দ জোবায়ের হাসান (১৫), হঠাৎপাড়ার গিয়াস উদ্দীনের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮), নতুনপাড়ার লাল মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৫), সেলিম রেজার ছেলে মাসুদ (১৫), শহরের তাঁতিপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম নাহিদ (১৬), সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে আবুল কালামের ছেলে রাজু আহমেদ (২২), একই গ্রামের পোড়াপাড়ার আক্কাস আলির ছেলে আবুল হাসান (২২), মসজিদপাড়ার রফিস উদ্দীনের মাহাবুব (১৮), আজিজুল হকের ছেলে ইকবাল হোসেন (১৮), সদর উপজেলার কামদেবপুর গ্রামে আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আবুল বাসার (২০), চকশ্যামনগর গ্রামের আজিবার আলির ছেলে সাইদুল ইসলাম (১৯), আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রোমান (১৪), বজলুর রশিদের ছেলে আবু জাফর (১৬), কোলা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে খালিদ সাইফুল্লাহ (১৮) ও বন্দর গ্রামের আবু তোরাফের ছেলে আবু সাইফ (১৬)। এর পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী। এসময় তিনি বলেন, ডিবির একটি চৌকস দল সন্দেহজনকভাবে একটি বাড়ি ঘেরাও করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নাশকতার পরিকল্পনা করার কোনো মিটিং চলছিলো সেখানে। এসময় ১৮ জন শিবির সদস্যকে আটক করা হয়। আটক শিবির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় পাখিভ্যান চালক কিশোর নয়ন হত্যা
মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পাখিভ্যান চালক কিশোর নয়ন শাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু-ু থানাধীন রঘুনাথপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক আশরাফুল।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন ছয়ঘরিয়া গ্রামের ডমপুর নামীয় মাঠে একটি অজ্ঞাতনামা কিশোরের (১৪) লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। কিশোরের লাশ উদ্ধারের পর লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে না পাওয়ায় সরোজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের এসআই গোলাম সরোয়ারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) একরামুল হোসাইন প্রযুক্তি সহায়তায় লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন। লাশটি কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানাধীন নৃশিংহপুর ফকিরপাড়ার মৃত মিঠু শাহ’র ছেলে নয়ন শাহ’র (১৪) নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যাকারী শনাক্তে মাঠে নামে পুলিশ। পরে আলমডাঙ্গার প্রায় ১৫টি স্থানের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িত আলমাডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা মাঝেরপাড়ার ইসলাম আলীর ছেলে আশরাফুল আলমকে (২৭) শনাক্ত করেন। আশরাফুলকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। গত বুধবার দিনগত রাতে ঝিনাইদহ মহেশপুর কোলা গ্রাম থেকে নয়নের পাখি ভ্যানটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে গত শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক অপারেশন একরামুল হোসাইন, এসআই হাসানুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঝিনাইদহ হরিণাকু-ু রঘুনাথপুর গ্রামে অভিযান চালান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ঘাতক আশরাফুলকে। গতকাল শনিবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে বিচারকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আশরাফুল আলম।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আসামি আশরাফুল আলম এবং এ কিশোর নয়ন একে অপরের ঘনিষ্ঠ পরিচিত ছিলো। একই এলাকায় ভ্যান চালানোর সুবাদে অনুমান দেড় বছর যাবত তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। আশরাফুল আলম কৌশলে কিশোর নয়নের ভ্যানযোগে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানাধীন বলদিয়া বাইনেপাড়া গ্রামে তার শ্বশুর রেজাউলের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে ছয়ঘরিয়া ডমপুর মাঠে নিয়ে গল্পচ্ছলে পরিকল্পিতভাবে সম্পূর্ণ ঠা-া মাথায় ভ্যানে থাকা পুরাতন শাড়ির একাংশ শ্বাসরুদ্ধ করে নয়নকে হত্যা করে পাখিভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় আশরাফুল।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More