মেহেরপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে সড়ক সম্প্রসারণের অভিযোগ

জমিতে বড় গর্ত হওয়ায় চাষাবাদ করা যাচ্ছে না : দেয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ
স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর সদর উপজেলায় আমদহ-আশরাফপুর সড়ক সম্প্রসারণ কাজের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ৭৫ জন জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলছেন, সড়কের পাশের জমি থেকে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নিয়েছেন ঠিকাদার। সেখানে আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। তাদের কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, গত বছর অক্টোবরে সদর উপজেলার আমদহ-আশরাফপুর সড়কের চার কিলোমিটার অংশ প্রশস্ত করার কাজ পায় কুষ্টিয়ার শৈকত ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কাজটি কিনে নেন মেহেরপুরের ঠিকাদার নুর ইসলাম। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৯৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। কাজের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৯ মে। সড়কের পাশে ১০ কাঠা জমি রয়েছে আমদহ গ্রামের বাসিন্দা ইউনুচ শেখের। ওই জমি চাষাবাদ করে তার সংসার চলে। ইউনুচ শেখ বলেন, ‘বোরো ধানের জন্য বীজতলা দিয়েছিলাম। একদিন সকালে জমিতে গিয়ে দেখি, যন্ত্র দিয়ে জমি থেকে মাটি তুলে নিচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন। বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ভয় দেখান। সড়কের পাশের প্রতিটি জমিতে সাত থেকে আট ফুট গর্ত করে মাটি নেয়া হয়েছে।
আমদহ গ্রামের কৃষক হাসানুজ্জামান বলেন, ওই সড়কের পাশে তার দুই বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে কলার চাষ করেছিলেন। ঠিকাদার কোনো কিছু না জানিয়ে কলাগাছসহ মাটি কেটে সড়কে দিয়েছেন। সেখানে গভীর গর্ত করা হয়েছে। এখন আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। মাটি কিনে ভরাট করতে গেলে লক্ষাধিক টাকা লাগবে। সড়কের পাশে আজগর শেখের ১০ কাঠা জমি রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ট্রাক্টর দিয়ে সেখানে জমির মাটি সমান করা হচ্ছে। আজগর শেখ বলেন, ঠিকাদারের লোকজন গায়ের জোরে কৃষি জমি নষ্ট করে মাটি তুলে নিয়েছে। এখন টাকা খরচ করে জমি সমান করতে হচ্ছে। গর্ত ভরাট ও জমি সমান করার জন্য প্রতি বিঘায় ৪০ হাজার টাকা লাগছে। এ সম্পর্কে ঠিকাদার নূর ইসলাম বলেন, জমি থেকে সামান্য মাটি কেটে সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যখন কাজ চলছিলো, তখন কেউ বাধা দেননি। এখন অনেকে কথা বলছেন।
এলজিইডির মেহেরপুর কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, দরপত্র অনুযায়ী, সড়ক সম্প্রসারণ করার কাজে ব্যবহৃত মাটি অবশ্যই ঠিকাদারকে ব্যবস্থা করে নিতে হবে। এ কারণে ১৫ লাখ টাকা শুধু মাটির ব্যবস্থা করার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কৃষি জমি নষ্ট করে সড়ক সম্প্রসারণ একেবারেই অবৈধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More