লুট হওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশের জাল বিস্তার : আটক ৩

আলমডাঙ্গায় আলোচিত জোড়া খুনের রহস্য উম্মোচনের পথে

আলমডাঙ্গা ব্যুরো:  আলমডাঙ্গা শহরের আলোচিত ও রহস্যাবৃত জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন উঠতি বয়সি যুবককে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ। সংঘটিত হত্যাকা-ের ৫দিন পর সন্দেহজনক তিন খুনিকে পুলিশ তাদের কব্জায় নিতে পেরেছে বলে জানা গেছে। খুনের সময় লুট করা দুটি মোবাইলের সূত্র ধরেই তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই পাঁচদিন ধরে থানা পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা রাতদিন নানা এঙ্গেলে খুনিদের খুঁঝতে জাল ফেলে রাখে। পুলিশের ফেলে রাখা জালে প্রথমে পা দেয় বিদ্যুৎ নামের এক খুনি। এরপর পুলিশ একে একে তুলে  নেয় সাহাবুল ও রাজিবকে। এই তিনজনকে আটক করেই ডিবি পুলিশ চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষে প্রেসব্রিফিং করা হতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের বজলু চোরের ছেলে সাহাবুল, একই গ্রামের মাসুদ ওরফে বুদোমের ছেলে বিদ্যুৎ ও পিন্টুর  ছেলে রাজিব। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বামী-স্ত্রী নজির উদ্দিন ও ফরিদা বেগমের নির্মম হত্যাকা-ের দিন অন্যান্য জিনিসের সাথে দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় খুনিরা। পুলিশ এই মোবাইল সেট দুটিকে জাল হিসেবে ফেলে রাখে। পাঁচদিন ধরে মোবাইল দুটি বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ মোবাইল খোলার অপেক্ষা করতে থাকে। মঙ্গলবার রাত থেকে দুটি মোবাইলের একটি খোলা পায় পুলিশ। লোকেশন ধরে পুলিশ মোবাইলের কাছে চলে যায়। পুলিশের মোবাইল জালে প্রথম আটকা পড়ে বিদ্যুৎ। এরপর একে একে আটক করা হয় সাহাবুল ও রাজিবকে। সূত্র জানায়, নজির উদ্দিন ধান-চালের পাশাপাশি বালির ব্যবসা শুরু করেন। এ জন্য তিনি একটি স্টেয়ারিং গাড়িও কেনেন। খুনের মাস্টারমাইন্ড সাহাবুল নজির উদ্দিনের সেই স্টেয়ারিং’এ বালি আনা-নেয়া করতো। ঘটনার দিন সাহাবুল তার সহযোগী বিদ্যুৎ ও রাজিবকে নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নজির উদ্দিনের বাড়ির সামনে হাজির হয়। বালি কেনার কথা শুনে এবং সাহাবুলকে চিনতে পেরে নজির উদ্দিন বাড়ির দরজা খুলে দেন। তারা বাড়িতে ঢুকে দুজনকে খুন করে টাকা, কিছু গয়না ও দুটি মোবাইলফোন নিয়ে  বেরিয়ে যায়। এটাকে চুরি করতে গিয়ে তাৎক্ষণিক হত্যার ঘটনা ধরা যায়। কিন্ত অনেকের ধারণা এই হত্যাকা-ের পেছনে বড় কোনো মাস্টারমাইন্ড থাকতে পারে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, কিছু টাকার জন্য দুই দুটি হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে না। মাস্টারমাইন্ড সাহাবুলের পেছনে বড় মাস্টারমাইন্ড থাকতে পার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটা নিশ্চিত যে, এ নৃশংস হত্যাকা- মিশনের মাস্টারমাইন্ড শাহাবুল। মিশন সাফল্য ম-িত করতে সাহাবুলই অন্য দুজনকে সঙ্গে নেয়। জানা যায়, সাহাবুল ব্যতিত অন্য দুজন অভিযুক্ত খুনি এ হত্যাকা-ের বিন্দিবিসর্গ জানতো না। তাদের দাবি সাহাবুল তাদেরকে জানিয়েছিলো যে, নজির উদ্দীনের নিকট থেকে জোর করে টাকা নিতে হবে। তার বাড়িতে নগদ টাকা থাকে। টাকা সবাই ভাগ করে নেবে। সাহাবুলের কথা অন্য দুজন বিশ্বাস করেছিলো খুব যুক্তিপূর্ণ মনে হয়েছিলো বলে। কারণ, শাহাবুল নিহত নজির উদ্দীনের বালি ব্যবসার কর্মচারী সে লাটাহাম্বার চালক। দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর সাহাবুল নজির উদ্দীনের কাছে কর্মরত। স্বাভাবিকভাবেই তাকে অন্যদুজন বিশ্বাস করেছে। সাহাবুল তাদেরকে জানিয়েছিলো, সে নজিরের কথা বলে ব্যস্ত রাখবে। অন্যদিকে, অন্য দুজন টাকা লুট করবে। কিন্তু মিশনের শুরুতেই সাহাবুল নজির উদ্দিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। নিশ্চিত হতে না পারাই শ্বাসনালী কেটে ফেলা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে? শাহাবুল কেন এই নৃশংস হত্যাকা- ঘটালো?

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More