সন্ত্রাস দমনে স্থাপন করা চুয়াডাঙ্গার একটি পুলিশ ক্যাম্পও উঠবে না

চুয়াডাঙ্গায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ওয়ার্কশপে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে এ ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা একসময় সন্ত্রাস অধ্যুষিত এলাকা ছিলো। প্রতিদিনই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হত্যা, ডাকাতির খবর শিরোনাম হতো। এখনও চুয়াডাঙ্গায় হত্যা, ডাকাতি থেমে নেয়। কিন্তু এর মাত্রা অনেক কম। এই পুলিশ ক্যাম্পের কারণেই কমে এসছে অপরাধমূলক কর্মকা-। তবে, এখন অপরাধের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে। এখন মাদকের অবস্থা এতটায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, অধিকাংশ অভিভাবকই তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন। চুয়াডাঙ্গায় এই অস্থায়ী ক্যাম্পের গুরুত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও জানেন। তিনিই প্রথম মোহাম্মদ নাসিমের হাত দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। যখন এই ক্যাম্প স্থাপন হয়েছিলো সেদিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আমাদের নেত্রী, এখনও প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন আমাদের নেত্রী। আমি আশা করছি চুয়াডাঙ্গার একটা পুলিশ ক্যাম্পও উঠবে না।

এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার আরও বলেন, আওয়ামী সরকার সবসময় সন্ত্রাসী দমনে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। আর অন্যদিকে বিএনপি সবসময় সন্ত্রাসী পুষেছে। আর আমরা সবসময় সন্ত্রাসী দমন করেছি। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি এখন চুয়াডাঙ্গায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। তবে এখনও কিছু জামাত, বিএনপির সন্ত্রাসী আছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে না। আপনারা যদি মনে করেন চুয়াডাঙ্গায় কোনো জামাত বিএনপির সন্ত্রাসী নেই, সেটা ভুল। এখনও তারা বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্র করছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য। কিন্ত তারা সফল হতে পারবে না। আমরা তাদের প্রতিহত করবো। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ যদি এদের বিষয়ে আমার কাছে সাহায্য চায় আমি অবশ্যই সহযোগিতা করবো।

ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান। চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৭টি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে খোলামেলা বক্তব্য প্রদান করেন স্ব স্ব এলাকার ব্যক্তিবর্গরা। তার মধ্যে সরোজগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন সরোজগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি শেখ মো. আব্দুল্লাহ, কুতুবপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে কুতুবপুর ইউপি সদস্য মকলেস হোসেন, শম্ভুনগর পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে এলাকার প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন, আসমানখালী পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে ব্যাংকার মো. মনিরুজ্জামান, খাসকররা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু, গোকুলখালী পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল বাতেন, দূর্লভপুর পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে বাড়াদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মকবুল হোসেন, পাঁচকমলাপুর পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. শাহিন, দলিয়ারপুর পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে জুড়ানপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, হাসাদহ পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে জীবননগর ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক জসিম উদ্দিন, হোগলডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে নতিপোতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের পক্ষে হিজলগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সাইফুল আজম মিন্টু বক্তব্য প্রদান করেন। অর্থনৈতিক উন্নতির গতিশীলতা ধরে রাখতে ও এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ক্যাম্পসমূহ রাখার পক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন তারা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কনক কুমার দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাববুর রহমান, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবির। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট অস্থায়ী ক্যাম্প এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সমাজসেবক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More