সুবিধাজনক অবস্থায় নেই ৫নং ওয়াার্ডের নাগরিকরাও

নির্বাচন পরবর্তী চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক প্রতিবেদন-৪
শামসুজ্জোহা রানা: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কয়েকটি মহল্লা শুধু ঘিঞ্জিভাবেই গড়ে ওঠেনি, পৌরসভার তরফে রাস্তাও করা হয়নি। বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না মহল্লাবাসীর। শুধু বর্ষা নয়, রাস্তা না থাকার কারণে যেন তেনোভাবে চলাচল করতে হয় ওই মহল্লাগুলোর বাসিন্দাদের। এছাড়া মহল্লার যেসব রাস্তা রয়েছে তার পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও ড্রেনের ওপর অধিকাংশ স্থানেই সøাব নেই। পরিষ্কারের অভাবে ময়লা আবর্জনায় ড্রেন বন্ধ হয়ে পানি জমে পরিবেশটাই হয়ে উঠেছে দূষিত।
নির্বাচনের পর নবনির্বাচিতরা এলাকার উন্নয়নে কী ভাবছেন, মহল্লাবাসীর প্রত্যাশাই বা কি? এসব জানতে গত কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড ঘুরে পাওয়া গেছে বহু তথ্য। বাগানপাড়া, ইসলামপাড়া, পৌর কলেজপাড়া, পশুহাটপাড়া ও রেলপাড়া নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা বর্তমানে ৭ হাজার ৫শ ২৬। এবারের নির্বাচনে ৪ হাজার ৭শ ৭৪ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে মতিয়ার রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামপাড়া পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৌর কলেজ ও রেলপাড়া ফাজিল মাদরাসা। ১ হাজার ৫শ ৭৪ ভোট পেয়ে মুন্সী আলাউদ্দিন আহম্মেদ নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ইসলামপাড়ার মৃত মুন্সী আলিম উদ্দীনের ছেলে। ৫নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন গোলাম মস্তফা শেখ মাস্তার। তিনি এবারের নির্বাচনে নির্বাচিতের চেয়ে ৩৪৪ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কানাপুকুরের বিপরীতে একটি মহল্লা গড়ে উঠেছে। জমি নিচু। রাস্তা নেই। দুর্ভোগ চরমে। রেলপাড়া থেকে কানাপুকুরের দিকে একটি রাস্তা রয়েছে। রাস্তার কিছু অংশ চওড়া হলেও কিছু অংশ একেবারেই সরু সংকীর্ণ। ফলে জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারবে না। বর্ষায় এ দুটি এলাকায় পানি জমে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পৌর কলেজপাড়ার ফুড ফ্যাক্টরির পাশ দিয়ে গলি রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। বহুদিন আগে ইটপেড়ে কোনরকম চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। এলাকার প্রায় অর্ধশত পরিবারের ক্ষোভ, এই মহল্লায় না আছে রাস্তার সংস্কার, না আছে পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা। কানাপুকুর মোড় থেকে বাগানপাড়া হয়ে ইসলামপাড়ার দিকে যাওয়া রাস্তার পাশে নির্মাণ করা ড্রেন কোনো কাজেই আসছে না। ড্রেনের যেসব স্থানে বাড়ির দরজা, সেখানে সøাব দেয়া হলেও অধিকাংশ এলাকায় সøাব নেই। মুক্ত ড্রেন ময়লা জমে এক ফোটা পানি গড়ানোরও জো নেই। কিছু কিছু স্থানে নোংরা পানি জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে মশা মাছি। ইসলামপাড়ার রাস্তার পাশের ড্রেনেরও অভিন্ন দশা। এ মহল্লার এক কোণে রয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ। মসজিদের সংযোগ সড়ক গড়ে তোলা হয়নি। মসুল্লিদের আশা, পৌরসভা এ দিকে নেকনজর দেবে। ইসলামপাড়া বটতলা থেকে আলমডাঙ্গা সড়কে ওঠা রাস্তার পাশে ড্রেন নেই। লাইটেরও ব্যবস্থা করা হয়নি। এ রাস্তার পাশে কিছু গলি রাস্তা গড়ে তোলা হয়েছে। বসতীর সংখ্যাও কম নয়। ইসলামপাড়া সিঁড়িঘাটেও পৌরসভার ময়লা ফেলা হয়। এতে যেমন নদী ভরাট হচ্ছে; তেমনই পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। নদীর ধার ঘেষে ইসলামপাড়ার একটি রাস্তা ছিলো। সেটা কালক্রমে বিলীন। পশুহাটপাড়ায়ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। নেই পৌর সরবরাহ পানির ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মুন্সী আলাউদ্দিন আহমেদের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনেক কিছু করবো ভেবে সময়ের অপেক্ষায় রয়েছি। আশাকরি পৌর মেয়রকে পাশে নিয়ে উন্নয়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবো। ইসলামপাড়ার বিলীন হওয়া রাস্তা পুনরুদ্ধারসহ নবগঙ্গার পাড়ের রাস্তা নির্মাণ করে এলাকায় চিত্তবিনোদনের জন্য পার্ক গড়ে তোলার স্বপ্ন রয়েছে। এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে সকলের সহযোগিতায় আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলে মানুষ একটু বুকভরে নিঃশ^াস নেয়ার জায়গা পাবে বলে বিশ^াস।
প্রসঙ্গত: মুন্সী আলাউদ্দীন আহমেদ পরপর ৪বার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবার নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More