কর্মস্থল ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার সাথে চলাচলে কঠোর নির্দেশনা

সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত : বেড়েছে গণপরিবহন চলাচলের বন্ধের মেয়াদ
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারীর কারণে খোলা মাঠে বা উন্মুক্ত স্থানে ঈদের নামাজের বড় জামাত পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া ১৫ শর্তে চলমান সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সপ্তম দফায় ছুটি বাড়িয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। ছুটিতে শবেকদর ও ঈদের ছুটিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ছুটির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসগুলো প্রয়োজন অনুসারে খোলা রাখতে পারবে। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও।
ছুটি বাড়ানোর আদেশে বলা হয়, কারোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৬ মের পর শর্তসাপেক্ষে বিদ্যমান ছুটি বৃদ্ধি করাসহ জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ/সীমিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদেশে ১৫টি শর্ত উল্লেখ করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১৭ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটিকালে জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/সীমিত থাকবে। ২১ মে (শবেকদরের সরকারি ছুটি) ২২-২৩ ও ২৯-৩০ মে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৪, ২৫ এবং ২৬ মে (ঈদুল ফিতরের সাধারণ/সরকারি ছুটি) এ ছুটি/নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সাধারণ ছুটি এবং চলাচল নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলা বা এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, ওষুধ কেনা, চিকিৎসা নেয়া, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার করা ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে দোকানপাটে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শপিংমলের প্রবেশদ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমল, দোকানপাট বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। সাধারণ ছুটির সময় জরুরি পরিষেবা, যেমন বিদ্যুত, পানি, গ্যাসও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস বন্দরগুলোর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন। সড়ক ও নৌপথে সব প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো, ভেসেল ইত্যাদি) চলাচল অব্যাহত থাকবে। কৃষিপণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী, ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীরা সাধারণ ছুটি/ চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন। সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসগুলো, প্রয়োজন অনুসারে খোলা রাখবে। সাধারণ ছুটি/নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এ সময়ে সড়কপথে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। মহাসড়কে মালবাহী/জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ব্যতীত অন্যান্য যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। উন্মুক্ত স্থানে ঈদের বড় জমায়েত পরিহার করতে হবে। করোনার কারণে সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরপর সেই ছুটির মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়। তবে এর মধ্যে কিছু বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ২ ঘণ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়া হয়। সেই সঙ্গে চালু হয় পোশাক কারখানা, বাইরে থেকে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজও পড়া যাচ্ছে এখন। ঈদের আগে-পরেও বন্ধ থাকবে গণপরিবহন: এবার রোজার ঈদের আগে ও পরে সারা দেশের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৩০ মে পর্যন্ত সড়কের গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে। অপরদিকে যাত্রীবাহী লঞ্চের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আগ থেকেই রয়েছে। তবে জরুরি কাজে নিয়োজিত ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করবে। এসব গাড়িতে যাত্রী বহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে ২৬ মার্চ থেকে সড়কের গণপরিবহনের ওপর লকডাউন আরোপ করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে দফায় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে আসছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সড়কে গণপরিবহনের ওপর লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ মে নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More