স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে মোহাব্বুরের শপথ

মাদকব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার ৭ মামলার আসামীর

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মাদকব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন মাদকব্যবসায়ী মোহাব্বুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে শপথ করেন তিনি। মোহাব্বুর রহমান চুয়াডাঙ্গার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের ইজাজুল হকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৭টি মামলা রয়েছে।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষণা করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)। যার প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী বাংলাদেশ পুলিশ মাদক নির্মূলে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের তৎপরতায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী মাদক অধ্যূষিত রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের ইজাজুল হকের ছেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৭টি মামলার আসামি মোহাব্বুর রহমান। তিনি এলাকায় মাহাবুল ওরফে মাহাবুর ওরফে মাহাবুব নামেও পরিচিত। সম্প্রতি আত্মসর্মপণ করার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্ত্রী মোছা. হিরা খাতুন ও একমাত্র পুত্র হাসিবুলকে (৮) নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির হন মোহাব্বুর। তারা জীবনে আর কখনো মাদকব্যবসা করবে বলে পুলিশ সুপারের কাছে অঙ্গীকার করে শপথ করেন।
এসময় মোহাব্বুর রহমান তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন মাদকব্যবসা করে অনেক টাকা রোজগার করলেও সেই টাকা তাকে শান্তি এনে দেয়নি বরং মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য করেছে। ফলে তিনি তার ৮ বছরের শিশু সন্তান হাসিবুলের জীবন যেন তার মতো অভিশপ্ত হয়ে না ওঠে, সেই বিষয়টি উপলদ্ধি করে মাদক ব্যবসা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসময় চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেয়া হবে না। বিধায় আসন্ন বিপদের সম্মুখিন হওয়ার আগেই সকল মাদকব্যবসায়ীরা মোহাব্বুরের মতো উপলদ্ধি থেকে মাদকব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন। ভালো হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়া হয়েছে। আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান করছি। নয়তো চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এতোটায় কঠোর হবে যে, পুলিশের সেই রূপ চুয়াডাঙ্গাবাসী এর আগে কখনো দেখেনি।
তবে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করা মাদকব্যবসায়ীদের গতিবিধি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। মাদকব্যবসায়ীরা পুলিশ সুপারের কাছে ভালো হওয়ার শপথ করে বাড়ি ফিরেই যেন শপথ ভঙ্গ না করে। আর তা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এর আগেও চুয়াডাঙ্গার সাড়ে চারশো’র বেশি মাদকব্যবসায়ী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলো। তারা কি আজও স্বাভাবিকভাবেই জীবনযাপন করছে? এমনটাই প্রশ্ন সচেতন মহলের।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More