দূতাবাসের ছাড়পত্র  জটিলতায় আজ ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরতে পারেননি ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা

দূতাবাসের ছাড়পত্র (এনওসি) না পাওয়ায় আজকেও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরতে পারেননি ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা।  সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ চেকপোস্ট দিয়ে কোন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে আগমন করেননি। গত রোববার ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দূতাবাসের ছাড়পত্র সংক্রান্ত জটিলতায় এখনও ভারতে আটকে আছেন তারা।  ভারতের কোলকাতায় মাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে গিয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারের বাসিন্দা মোবাশ্বের রহমান।  মোবাইলফোনে কথা হয় তার সাথে।  তিনি জানান, আমার মা ক্যান্সারের রোগী। চিকিৎসার জন্য দেড় মাস আগে মাকে নিয়ে কোলকাতায় এসেছিলাম। চিকিৎসা শেষে এখন দেশে ফিরতে পারছিনা।  আজ সোমবার ভোর ৬ টা থেকে এনওসি নেয়ার জন্য কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে এসেছিলাম। এখানে ৪ শতাধিক বাংলাদেশী লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।  বেলা ২ টার দিকে ছাড়পত্র নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পেরেছি। তিনি আরও জানান, কোলকাতায় কঠোর লকডাউন চলছে। লকডাউনের কারণে দূতাবাসে যাতায়াতের জন্য কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না। লকডাউনের মধ্যে ছাড়পত্র (এনওসি) সংগ্রহ করতে সবাইকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এদিকে, দুপুরে দর্শনা চেকপোস্ট পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। দর্শনা ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা সে দেশের দূতাবাস থেকে অনাপত্তি পত্র (এনওসি) না পাওয়ায় দেশে প্রবেশ করতে পারেনি।  আজ সোমবার সকালে থেকে সেখানে অনাপত্তি পত্র (এনওসি) নিতে ভীড় জমিয়েছেন বাংলাদেশীরা।  আজ সেখানে আবেদন নেয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে এমন প্রায় ৩ শতাধিক যাত্রীদের দেশে ফিরয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।  গত রোববার থেকে তাদের দেশে প্রবেশের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়। দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল আলিম জানান, ভারত থেকে দেশে আসা বাংলাদেশীদের আগমন উপলক্ষে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে দর্শনা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। ভারতের গেদের চেকপোস্টের ইনচার্জ সনজিদ কুমারের  সাথে কথা হয়েছে।  তিনি জানিয়েছেন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী কোন যাত্রী গেদে আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে আসেন নি।  দূতাবাসের ছাড়পত্র নিয়ে আসলে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন জানান, আজ সোমবারও কেউ দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেননি। এ বিষয়ে ভারতের কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়েছে।  তারা আমাদের ৫১ জনের ছাড়পত্রের নামের তালিকা পাঠিয়েছেন।  তবে, কবে নাগাদ ছাড়পত্র পাওয়া ওই ৫১ জন বাংলাদেশী দেশে ফিরবেন তা নিশ্চিত করা হয়নি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কিত চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দর্শনা চেকপোস্টে প্রবেশের পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদেরকে সেখানেই হেলথ স্ক্রিনিং ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত রোগীদেরকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া এবং বাকীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে প্রাথমিকভাবে নার্সিং ইনস্টিটিউট ও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নির্বাচন করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্ধারিত পরিবহনে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যাত্রীদেরকে পৌঁছানো হবে। কোয়ারেন্টিনে অবস্থানকালীন সকলকেই থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করতে হবে। দেশে প্রবেশকারীদের পাসপোর্ট পুলিশ হেফাজতে থাকবে। কোয়ারেন্টিন শেষে সিভিল সার্জনের ছাড়পত্রের পর পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়া তদারকির জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে প্রধান করে সাত সদস্যের মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More