গাংনীর ইজিপিপি প্রকল্পে নয়ছয় : প্রকল্প চেয়ারম্যানকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি উত্তোলন

গাংনী প্রতিনিধি: গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নে ইজিপিপি প্রকল্পের শ্রমিক নিয়ে চলছে নয়ছয়ের ঘটনা। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রকল্প চেয়ারম্যান শ্রমিকদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন অনেকেই। আবার অনেক শ্রমিক কাজে না এসে প্রকল্প  চেয়ারম্যানকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে মজুরি উত্তোলন করছেন। গাংনীর রাইপুর ইউনিয়নের দু’টি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে ইউপি  মেম্বারদের ক্ষেতের কাজ করানো হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় এ অনিয়ম করায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে পারছেন না। এমন অভিযোগ করেছেন অনেকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন কাজের ক্ষেত্রে বেশকিছু শ্রমিক অনুপস্থিত রাখা হয়। আবার কোনো কোনো দিন মেম্বার ও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কাজে খাটানো হয়। কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিক অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় পূর্ণ দেখানো হয়। এই অনুপস্থিত শ্রমিকদের শ্রমের টাকা চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভাগাভাগি করে নেয় বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার কয়েকজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাইপুর ইউনিয়নে ইকুড়ি ঝড়ের রাস্তায় ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এদের মধ্যে তিনজন শিশু শ্রমিক রয়েছেন। অথচ ওই প্রকল্পে ৬১ জন শ্রমিক কাজ করার কথা। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক সর্দার রাশিদুল ইসলাম ছিলেন না। তার কাছে হাজিরা খাতা থাকলেও তাতে গত ১০ দিনের কোনো হাজিরা নেই। উপরন্ত জবকার্ডের কোনো হদিস মেলেনি। টাঙ্গানো হয়নি প্রকল্পের সাইনবোর্ড। শ্রমিক সর্দার জানালেন প্রকল্প চেয়ারম্যান যেভাবে বলেন সেভাবেই শ্রমিকদের হাজিরা দেয়া হয়। প্রকল্প চেয়ারম্যান নার্গিস মেম্বার জানান, তিনি প্রকল্পের কাজের কাছে যেতে পারেননি তাই তার স্বামীকে পাঠিয়েছিলেন। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে অনেক কৃষকই ধান কাটাতে লোক নিয়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা কাজে আসতে পারেনি বলেও জানান তিনি।

এদিকে একই ইউনিয়নের চাদঁপুর খালের মাঠের রাস্তায় নিয়োজিত প্রকল্পের চেয়ারম্যান হাসান মেম্বার মাটিকাটা শ্রমিকদের দিয়ে তার কৃষি জমিতে কাজ করাচ্ছেন। সোমবার হাসান মেম্বার ৫জন শ্রমিক দিয়ে তার মরিচ ক্ষেত পরিচর্যা করিয়েছেন। প্রতিদিনই তিনি প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে নিজের কৃষিকাজ করান বলে অভিযোগ অনেকের। এছাড়াও প্রতিদিন ৮-১০ জন শ্রমিক কম থাকলেও তিনি সমস্ত শ্রমিকের হাজিরা প্রদান করেন। এ ব্যাপারে হাসান মেম্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানাগেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দরিদ্র মানুষ যাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, সেজন্য বিশ্ব ব্যাংক চালু করেছে ‘অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসূচি’ (ইজিপিপি)। এ কর্মসূচি বাস্তাবায়ন করছে স্ব-স্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। রাইপুর ইউনিয়নের ২০২জন শ্রমিক কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, জনবল সঙ্কটের কারণে একত্রে সবকাজ পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। তারপরেও আমরা শতভাগ কাজ করানোর চেষ্টা করছি। তবে অনিময় পেলে তার বিরুদ্ধে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More