কুষ্টিয়ায় দুধ নিয়ে বিপাকে খামারিরা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিপাকে পড়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দুগ্ধ খামারিরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, মিষ্টির দোকান, হোটেল, দোকানপাট বন্ধসহ হাটবাজারে লোকজনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গরুর দুধ বিক্রি করতে পারছেন না তারা।
একদিকে দুধ বিক্রি হচ্ছে না, তার উপরে আবার গো-খাদ্যের দাম কমেনি। এতে আর্থিক সংকটে রয়েছেন দুগ্ধ খামারীরা।
জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে ৪৫৮টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। খামারগুলোতে ৩৫ হাজার গাভী রয়েছে। প্রতিদিন খামারগুলো থেকে ৩০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়।
প্রতিদিন ওই এলাকায় খামারের উৎপাদিত প্রায় ৮ হাজার লিটার দুধ থেকে তৈরি করা ছানা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া কুমারখালী শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ১০ হাজার লিটার ও কুষ্টিয়া শহরে ১২ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করা হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রথমদিকে দুধ থেকে ছানা তৈরি করে সংরক্ষণ করলেও এখন আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। যে কারণে কম দামে দুধ বিক্রি করছেন খামারিরা। অনেক সময় কম দামেও দুধ বিক্রি না হওয়ায় ফেলে দিচ্ছেন তারা।
এছাড়া এলাকার অধিকাংশ খামারে ১০ থেকে ১৫টি করে গাভী রয়েছে। বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খামারিরা আরও বিপাকে পড়েছেন।
কুমারখালী উপজেলা দয়রামপুর এলাকার খামারি সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বড় কোনো প্রতিষ্ঠান দুধ নিচ্ছে না। মিষ্টির দোকান ও হোটেলগুলোও বন্ধ। অল্পদামেও কেউ দুধ কিনছে না। এখানে দুধ সংরক্ষণ করে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই প্রায়ই দুধ বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা খামারিরা পথে বসে যাব।’
এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বিন্দা আলী বলেন, ‘আমার খামারে ১০টা গাভী রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় আমি দেড় মণ দুধ সংগ্রহ করি। কিন্তু এলাকায় দুধের চাহিদা একেবারেই নাই। তাই অনেকদিন দুধ বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিয়েছি।’
জগন্নাথপুর এলাকার ডেইরি ফার্মের মালিক আহমেদ ইমতিয়াজ জানান, খুচরা বিক্রেতারা আগে ৫০ টাকা লিটারে বাজারে দুধ বিক্রি করতেন। করোনার কারণে বর্তমানে তা ২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। আর খামারিরা একেবারেই দুধ বিক্রি করতে পারছেন না।
কুমারখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, খামারিদের টিকিয়ে রাখার জন্য ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রণোদনার আবেদন করা হয়েছে। খামারিদের মধ্যে যাদের ব্যাংক লোন রয়েছে, তাদের ঋণের সুদ মওকুফের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More