নির্দেশনা মেনে চলুন সুস্থ থাকুন

সিংহভাগ মানুষ বেশিরভাগ সময়ই সুস্থ থাকেন, সে কারণেই অসুস্থতার আগে সুস্থতা কতবড় নিয়ামত তা বুঝতে পারেন না। এরপর যদি কোনো ভাইরাসজনিত কারণে অসুস্থতার পাশাপাশি অসহায়ত্ব গ্রাস করার যথেষ্ট কারণ থাকে তা হলে কষ্টটা কতোটা তীব্র তা অনুমান করাও কঠিন। নোভাল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অবস্থা কতোটা ভায়াবহ হতে পারে তা অনুমানে অনেকের কর্মকা-েই ঘাটতির বিষয়টি ফুটে উঠছে। এতে নিজে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন, উপরোন্ত অন্যকেও ওই পরিস্থিতির মধ্যে টানছেন।
নোভেল করোনা ভাইরাস কি? শব্দগুলো ল্যাটিন। নোভেল অর্থ নতুন আর করোনা অর্থ মুকুট। আর ভাইরাসের অর্থ বিষ। এ হিসেবে নোভেল করোনা ভাইরাস মানে নতুন মুকুটাকৃতির বিষ। ফরাসি ভাষায় করোনা মানে অবশ্য কিরণ। বা আলোর ছটা। সে যাই হোক। এ নাম মানুষেরই দেয়া। এ বিষ এতোটাই ক্ষুদ্র যে খালি চোখে দেখা যায় না। চোখের একটি ভ্রুকে যদি সশ্রাধিকবার ভাগ করা যায় তার একটির যে আকৃতি হবে ওর মাপটাও অনেকটা তেমন। অতো ক্ষুদ্র প্রটিনের ওপর মুকুটাকৃতি কাটা রয়েছে। যা মানুষ থেকে মানুষে দ্রুত ছড়াচ্ছে। ওরা নিজেরা না ছাড়ালেও মানুষই নানাভাবে ওটা মেখে নিচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে তা হলো, মানুষের শরীরে নাক, মুখ বা চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। শরীরে কিছু টিসু ওই ভাইরাস পেলে তা গ্রহণ করে। ভাইরাস নিজের কোড মানুষের শরীরের কোষে আদান প্রদানের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করতে থাকে। ফুসফুসসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে অনেকের ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এটা এতোটাই ছোঁয়াছে যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে প্যান্ডোমিক বা মহামারি ঘোষণা করেছে। এখনও পর্যন্ত প্রতিশেধক আবিস্কার হয়নি। বিভিন্ন দেশে কিছু আবিষ্কার হলেও তা রয়েছে পরীক্ষা নিরীক্ষা পর্যায়ে। যতোদিন এই ভাইরাস ছড়াতে থাকবে এবং প্রতিবেশধক আবিষ্কার হচ্ছে না ততোদিনই সুস্থ থাকতে হলে নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়ম মানার জন্য সরকারিভাবে নানা পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। অনেকের দৃষ্টিতে এটাকে বাধ্য করা হচ্ছে বলে মনে হলেও বাস্তব অবস্থাদৃষ্টে নিজ নিজ ক্ষেত্রেই নিজেরই দায়িত্ব, নিয়ম মেনে সুস্থ থাকার চেষ্টা করা। কেউ আক্রান্ত হলে বা কারোর মধ্যে প্রাথমিক উপস্বার্গ দেখা দিলে তারও প্রয়োজন স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করা। রোগ আড়াল করলে নিজের যেমন ক্ষতি তার চেয়ে বেশি ক্ষতি সমাজের। করোনার সাথে চলমান যুদ্ধ কবে নাগাদ শেষ হবে? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব দেয়ার সময় এখনও আসেনি। তবে যুদ্ধ যে খুব বেশি দীর্ঘ হবে না তাও অনুমান করা যায়। ইতোমধ্যেই জুলাইয়ের শুরু থেকে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে এমনই অভিমত দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের অনেকে। তখন মানুষের জীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। বিশেষজ্ঞরা একে বলছেন ‘নতুন স্বাভাবিক’ জীবন। এর আগ পর্যন্ত দেশের মানুষকে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
এটা ঠিক যে, কতদিনই আর ঘরে বসে থাকা যায়! আর্থিক বিষয়টি কোনভাবেই অস্বীকার করার যায় না। একদিকে ভাইরাস, অন্যদিকে অনাহার। কোনটিকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। ফলে সরকারিভাবে ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ন্যায্যেমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও বিক্রি করা হচ্ছে। ত্রাণ নিতে গিয়ে সামাজিক বা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা যেমন জরুরি, তেমনই পাড়া মহল্লা হাট বাজারসহ সর্বক্ষেত্রেই সকলকে সতর্কতা তথা নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। উদাসিনতা বয়ে আনবে সর্বনাশ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More