জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এটা একটি ভালো খবর। প্রকৃতপক্ষে, এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করে শেষ করার দাবি সমগ্র জাতিরই বলা যায়। এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে আগামী নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে। অভ্যুত্থান চলাকালে চানখাঁরপুলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শুনানি শেষে বিচারক মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন তদন্ত প্রতিবেদন। একইসঙ্গে এই মামলায় অভিযুক্ত ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আগামী ৩ জুন মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নিপীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক বিচারের উদ্যোগ নেয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলো। উল্লেখ করা যায়, গণ-অভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসেও অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছিল না। এতে দেশবাসী, বিশেষত অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা নিহত ও আহত হয়েছিলেন, তাদের পরিবারগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিল। এবার তাদের সেই ক্ষোভের প্রশমন হবে নিশ্চয়ই। প্রকৃতপক্ষে, সমগ্র দেশবাসীই প্রত্যাশা করে অপরাধীরা শাস্তি পাক এবং সেটা ন্যায়বিচারের মাধ্যমে। জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে যারা, তারা ন্যায়বিচারের মাধ্যমে শাস্তি না পেলে জাতির জন্য তা চিরকলঙ্ক হয়ে থাকবে। মামলা হয়েছে অনেক। কোনো কোনো মামলায় নির্দোষরাও আসামি হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যাদের আসামি করা হয়েছে, আমরা আশা করব, তদন্ত প্রক্রিয়ায় তাদের অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হবে। তাছাড়া আদালতের সুবিচারের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। দেশে বিদ্যমান মামলাজটে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি কতটা দ্রুততার সঙ্গে করা যাবে, এটা এক প্রশ্ন বটে। তবে আগামী দিনে দেশকে অপরাধমুক্ত রাখতে হলে শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অপরাধপ্রবণদের একটা শক্ত বার্তা দিতেই হবে। আমাদের পুলিশ ও বিচার বিভাগ এ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, এটাই প্রত্যাশা।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.