সড়কে এভাবে ঝরতেই থাকবে তাজা প্রাণ

সম্পাদকীয়

দেশের সড়ক-মহাসড়কে চলাচল নিরাপদ করতে রয়েছে আইন, তবে সেই আইনের তোয়াক্কা যেন কেউ করছেই না। এর ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি মর্মান্তিক পন্থায়। প্রতিনিয়ত সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ। গতকাল বুধবারসহ গত কয়েকদিন আমরা এমনই একাধিক বড় দুর্ঘটনার খবর শুনেছি।  ‘রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রেলক্রসিং এলাকায় ট্রাক, মাইক্রোবাস ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার সকাল ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

কালুখালী থেকে ছেড়ে আসা রাজবাড়ীগামী একটি আটোরিকশাকে পেছন থেকে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। ওইসময় আবার কুষ্টিয়াগামী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ওই আটোরিকশার। এতে ঘটনাস্থলে এক শিশুসহ তিনজন মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে আরও ৪জন মারা যান।’ এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার ‘বরিশাল-ঢাকা মহাসকের উজিরপুরের বামরাইল এলাকায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা থেকে যমুনা লাইন নামে একটি বাস যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিলো। ভোররাতে বাসটি উজিরপুরের বামরাইল অতিক্রমকালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাসে একটি গাছের সাথে আছড়ে পড়ে। এতে বাসের মধ্যে আটকা পড়ে যাত্রীরা। খবর পেয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনা স্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে শিশুসহ ৯ জন ঘটনা স্থলে নিহত হয়।’ পরে সেই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছিলো।

এরও আগে গত ২৬ মে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় পাথর বোঝাই ট্রাক ও লেগুনার সংঘর্ষে ৫ জন কৃষি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে যাত্রী নিয়ে লেগুনাটি নাটোরের দিকে দিকে যাচ্ছিলো। লেগুনাটি হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক দিয়ে রামারচর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পাথর বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত ও ৬ জন আহত হন। আহতদের সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে একজন ও সকালে আরও এক জন মারা যান। এই কয়েকটি খবর সড়ক দুর্ঘটনার বর্তমান চিত্রের উদাহরণ মাত্র। এমন অহরহ দুর্ঘটনা দেশজুড়ে ঘটে থাকে, যার সবগুলো সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয় না। আমরা মনে করি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ এবং সড়ক আইন মেনে চললে মৃত্যুর হার প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে আইনের বাস্তবায়ন কেন হচ্ছে না, সে বিষয়ে নজর দেয়ার সময় এসেছে। এজন্য আরও উদ্যোগী হতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More