আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে শুরু হলো প্লাজমা থেরাপি

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঘোর অমানিশায় মিলেছে আলোর দিশা। করোনা মহামারীতে দিশাহারা দেশে প্লাজমা থেরাপির কার্যক্রম উদ্বোধন অনেকটা স্বস্তির খবর। গতকাল বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে দেশের ইতিহাসে থেরাপির জন্য প্লাজমা সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময়ে প্লাজমা দান করেন কভিড-১৯ জয়ী দুই স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক। অত্যাধুনিক এফ আর এস এস মেশিনে তাদের দেহ থেকে প্লাজমা কিংবা রক্ত রস সংগ্রহ করা হয়। থেরাপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার পর নির্দিষ্ট মান উত্তীর্ণ হলে অ্যান্টিবডি হিসেবে করোনা রোগীদের দেহে প্রয়োগ করা হবে।

প্লাজমা দান করা স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার করোনা হয়েছিলো। আমি কভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসক। আমার একবার প্লাজমা দিয়ে যদি অনেক মানুষ উপকৃত কিংবা ভালো হয়, তাহলে এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় অর্জন। তিনি বলেন, যারা করোনা থেকে ভালো হয়ে একবার করে প্লাজমা দান করবেন, সেটা হবে সবার জন্যই ভালো। প্লাজমা থেরাপির পুরো কার্যক্রম দেখভাল করছে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত ১২ জনের একটি কমিটি। ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মাজহারুল হক তপন বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অনুমোদনের পরে আমরা প্লাজমা সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছি। এসব প্লাজমা এই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মাঝে সঞ্চালন করা হবে। এখানে ভালো ফল পাওয়া গেলে পরবর্তীতে বিএমআরসি থেকে অনুমোদনের পর অন্যান্য কভিড হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাছির উদ্দীন বলেন, এখনো পর্যন্ত করোনার কোনো চিকিৎসা নেই। তাই করোনা রোগীদের ভালো করতে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে প্লাজমা সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান বলেন, প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজটি শেষ হতে পারে আগামী জুনে। প্রাথমিকভাবে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর ওপর আশা জাগানিয়া ‘প্লাজমা থেরাপি’ প্রয়োগ করা হবে।

ঢামেক সূত্র জানায়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেনের পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক পিয়াস ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের আতিয়ার রহমান প্লাজমা দান করতে রাজি হন। প্লাজমা থেরাপি হলো- আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীর শরীরে এই ভাইরাস প্রতিরোধী এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সেই অ্যান্টিবডিযুক্ত প্লাজমা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত অন্য রোগীর শরীরে প্রবেশ করিয়ে ভাইরাসটিকে মেরে ফেলা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More