একটি দলের সঙ্গে আলোচনায় তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে না : এনসিপি

স্টাফ রিপোর্টার: অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে শুধু একটি দলের নেতার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক থেকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য নতুন তারিখ নির্ধারণ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির কয়েকজন নেতা এমন মন্তব্য করেন। গতকাল শুক্রবার ইউনূস-তারেক বৈঠকের পরপরই এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনা হচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এদিন বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর শুক্রবার লন্ডনে প্রথমবারের মতো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সরাসরি সাক্ষাৎ এবং একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে দেশে রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের টানাপড়েন চলছে। তবে এ বৈঠক নিয়ে এনসিপির কয়েকজন নেতা ব্যক্তিগতভাবে প্রতিক্রিয়া জানালেও দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বৈঠক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ বৈঠকের সঙ্গে দেশের মাটি ও মানুষের কোনো সংযোগ নেই। সংস্কার আর বিচারকে পাশ কাটিয়ে সরকার যে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে তা ১৮ কোটি মানুষের নির্বাচন হবে না। এভাবে নির্বাচনের দিকে গেলে আরেকটা ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশের মাটিতে সরকার যখন বিশেষ একটি দলের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসে তখন এটা হয়ে যায় গণ-অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার পরিপন্থি। সেখানে জুলাই ঘোষণার স্পষ্ট বার্তা দেখিনি। মৌলিক সংস্কার প্রশ্নেও বার্তা পাইনি। শুধু একটি দলকে খুশি করতে নির্বাচন নিয়ে বার্তা আসছে। বিচার ও সংস্কার না হলে তার দল এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এদিকে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং দলের রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, অন্যান্য রাজনীতিক দলকে বাদ দিয়ে শুধু একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের যে চেষ্টা হচ্ছে সেটিকে আমরা নেতিবাচকভাবে দেখি। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন সংস্কারের পর্যাপ্ত অগ্রগতি এবং বিচারের প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরাও তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এ কারণে এনসিপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের এ দাবি উপেক্ষা করে যদি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হয় তবে তা হবে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। দলের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, কী পদ্ধতিতে সংস্কার হবে তা ঠিক হয়নি। এর আগেই প্রধান উপদেষ্টার গণভোট খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভালো কিছু নয়। এছাড়া শহীদ পরিবারগুলোর কোনো ধরনের মতামত ছাড়াই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা সমীচীন হবে না।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More