ওষুধ-ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায়

 

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত বিশ্ব। প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সারি। করোনায় জীবনহানি ঠেকাতে ওষুধ ভ্যাকসিন নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এরই মাঝে প্লাজমা থেরাপির সফলতায় আশাবাদী চিকিৎসকরা, উন্মোচন হয়েছে ভাইরাসের জিনোম রহস্য। দেশে করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে রেমডেসিভির ওষুধের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৩ জন, মারা গেছেন ১৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন, মারা গেছেন ৩২৮ জন। সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ৪ হাজার ৩৭৩ জন। চাইল্ড রিসার্চ হেলথ ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স হয়েছে। গত মঙ্গলবার চাইল্ড রিসার্চ হেলথ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তারাই সর্বপ্রথম এ জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন। এ জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে ভাইরাসটির গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে পারবেন গবেষকরা। এই জিন রহস্য আবিষ্কারের গবেষণায় নেতৃত্ব দেন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সমীর কুমার সাহা ও তার মেয়ে ড. সেঁজুতি সাহা। এই জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাসটির রূপান্তরও বোঝা যাবে। যা করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। কাজে লাগবে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারেও। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. তারেক আলম দাবি করেছেন, অ্যান্টিপ্রোটোজোয়াল মেডিসিন ইভারমেকটিনের সিঙ্গল ডোজের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের তিন দিনে ৫০ শতাংশ লক্ষণ কমে যাবে। তবে এ তথ্য ঘিরে চিকিৎসকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এটা এখনো প্রমাণিত নয় বলে দাবি করছেন অনেক চিকিৎসক। করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে রেমডেসিভির ওষুধের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের দুটি কোম্পানি তাদের উৎপাদিত রেমডেসিভির ওষুধের নমুনা জমা দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে। পরীক্ষামূলকভাবে দেয়া হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীদের। বেক্সিমকো ও এসকেএফ ছাড়াও আরও ৬টি কোম্পানি ওষুধটি উৎপাদনের রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে সরকারের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে আছে, স্কয়ার, বিকন, ইনসেপ্টা, অপসোনিন, পপুলার ও হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, ‘রেমডেসিভির অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ একসময় ইবোলাতে ব্যবহার হতো। এখন ‘ইমারজেন্সি অথরাইজেশন’ দিয়েছে আমেরিকার দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। একজন রোগীর সুস্থ হতে যেখানে ১৫-১৬ দিন লাগে, সেখানে এই ওষুধ প্রয়োগের ফলে ১১ দিনে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন’। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে গণস্বাস্থ্যে কিটও। অনুমোদন পেলে মাত্র ১৫ মিনিটে শনাক্ত করা যাবে করোনা রোগী। করোনায় মৃত্যুরোধ এবং দ্রুত আরোগ্যের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষামূলক শুরু হয়ে ‘প্লাজমা থেরাপি’ কার্যক্রম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে। তারপর সেটি প্রয়োগ করা হবে গুরুতর অসুস্থদের। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৪৫ জন রোগীর ওপর এই থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। এরপর তাদের উন্নতির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীদের ওপর প্রয়োগের বিষয়টি আসবে। সফলতা পাওয়া গেলে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় এটি পুরোদমে শুরু করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More