দামুড়হুদায় ভিক্ষুকের বসতঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়াসহ বাঁশঝাড় কেটে দিলো প্রতিপক্ষ

দামুড়হুদা অফিস: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার সীমান্তবর্তী হুদাপাড়া গ্রামে বিধবা ভিক্ষুক আবিছন বেগমের (৬৫) বসতঘর ভেঙে  গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে জমিতে থাকা বাঁশঝাড় কেটে দিয়েছে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ আজিম ফকিরের ছেলে আপেল উদ্দীন গং। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার দুপুরে। ভিক্ষুকের সাথে এমন আচরণে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

আপেল উদ্দীন জানায়, হুদাপাড়া মৌজার এসএ ৯৬৩ ও আরএস ৮৯৯ দাগের ৫৬ শতক জমির মধ্যে ২৫ শতক জমিতে আবিছন বেগম ৩০-৪০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। বারবার আবিছন বেগমকে জমি ছেড়ে দিতে বললেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। যে কারণে ২০০৮ সালে আপেল উদ্দীন জমি দাবি করে আদালতে মামলা করেন। ২০১৮ সালে এ মামলার রায় হয় তার পক্ষে। এরপর ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর একইভাবে চুড়ান্ত রায় হয় আপেলের পক্ষে। এরপর ২০২০ সালের প্রথম দিকে আপেল ওই জমি থেকে আবিছন বেগমকে উচ্ছেদে মামলা করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর মামলার রায় আপেলের পক্ষে আসে। গত শুক্রবার দুপুরের দিকে আদালতের পক্ষ থেকে উক্ত জমি আপেলের বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়। আদালতের লোকজন পতাকা টানিয়ে দেয়ার পরপরই আপেলসহ ১৪-১৫ জন মিলে জমিতে থাকা ভিক্ষুক আবিছন বেগমের মাটির বসতঘর, রান্নাঘর ভেঙে গুড়িয়ে জমিতে থাকা বাঁশের ঝাড় কেটে উজাড় করে দেন। ভিক্ষুকের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। এ বিষয়ে আপেল  বলেন, আদালতের নির্দেশনায় যারা বাসগাড়ি করতে আসেন তারাই ঘর ভেঙে বাঁশঝাড় কেটে দিয়ে জমির দখল বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন।

স্থানীয়রা জানান, বাসগাড়ি করতে এসে তারা শুধুমাত্র ঢোল বাজিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়ে যায়। তারা চলে যাওয়ার পরপরই আপেলসহ ১৪-১৫ জন এসে বসতঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। পরে তারা বাঁশঝাড় কেটে উজাড় করে দেয়।

এ ব্যাপারে আবিছন বেগম বলেন, ‘জমি কিনে খারিজ করে নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছি।  প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আমি একজন অসহায় স্বামী হারা মানুষ। জমির ব্যাপারে আদালতে কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানিনা। এ ব্যাপারে আমার নিকট কোনো নোটিশ আসেনি। আমার স্বামী বেঁচে থাকাকালীন আমাকে কেউ কিছু বলেনি। বছর পাঁচেক আগে আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আপেলরা আমার জমিতে এসে বিভিন্ন ধরণের অত্যাচার করে আসছিলো।

কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য একই গ্রামের নুর মোহাম্মদসহ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বলেন, জমি আপেলের হলেও এভাবে একজন ভিক্ষুকের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়া ঠিক হয়নি।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আব্দুল খালেক বলেন, আবিছন বেগম নামে এক মহিলা অভিযোগ করেছেন। তদন্তের জন্য  ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর সব জানা যাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More